শিরোনাম
মহেশখালি, কক্সবাজার, ২৮ জুলাই, ২০২৩ (বাসস) : কয়লাচালিত মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি আগামীকাল ২৯ জুলাই পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে। এই ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ৬শ’ মেগাওয়াট। কর্মকর্তারা আগামী ডিসেম্বর নাগাদ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুরোপুরি চালুর আশা করছেন।
প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাসস’কে বলেন, ‘২৯ জুলাই দু’টি ইউনিটের মধ্যে প্রথমটি (মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্টের) পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে।’
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বছরের ডিসেম্বরে ইউনিটটি নিয়মিত উৎপাদন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, প্ল্যান্টের সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা ১২শ’ মেগাওয়াট, আগামী মার্চ বা এপ্রিল মাসে পুরোদমে উৎপাদনের যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এটি পুরোপুরি চালুর পূর্ব পরিকল্পনা ছিল।
সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর অন্যতম মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি জাপানের সহায়তার মোট প্রায় ৫১ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এবং এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর অন্যতম।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, পুরো প্ল্যান্টে প্রতিদিন ১০ হাজার টন ও প্রতিটি ইউনিটে ৫ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হবে। এখন পর্যন্ত ২ লাখ টন কয়লা সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং ৬৫ হাজার টন আগামী ৭ আগস্ট উৎপাদন এলাকায় পৌঁছবে।
প্রকল্প পরিচালক জানান, জাহাজ থেকে সরাসরি ট্যাঙ্কে কয়লা আনলোড করার জন্য প্রকল্প এলাকায় দু’টি জেটির পাশাপাশি ১৭ লক্ষ টন স্টোরেজ ক্ষমতার চারটি ট্যাঙ্ক ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে।
ট্যাঙ্কগুলোর ৬০ দিনের জন্য কয়লা সংরক্ষণের সক্ষমতা রয়েছে। জাহাজ থেকে কয়লা আনলোড করতে দেড় থেকে দুই দিন সময় লাগবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, কয়লা খালাস করা পরিবেশবান্ধব হবে, কারণ, কয়লা সরাসরি জেটি থেকে ট্যাঙ্কে অফলোড করা হবে।
কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ১ হাজার ৬০৮ একর জমির ওপর স্থাপিত হচ্ছে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের স্থান পরিদর্শনকালে বাসস প্রতিনিধি দেখতে পান, কয়লা উত্তোলনের জন্য দু’টি জেটি এবং কয়লা সংরক্ষণের জন্য চারটি ট্যাংক নির্মাণসহ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে।
মাতারবাড়ি গভীর বন্দর ও মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাইটের কাছে এলএনজি ও এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২৫ বছরের জন্য আজীবন ছাই সংরক্ষণের জন্য দু’টি পৃথক ছাই পুকুর রাখা হয়। একটির আয়তন ৯০ একর ও অন্যটির ৬০০ একর জুড়ে বিস্তৃত। কয়লা সংরক্ষণের জন্য ৮০ একর জমিতে কোল ইয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার এবং জাইকার মধ্যে ১৬ জুন, ২০১৪ তারিখে একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে জাইকা ৪৩,৯২১ কোটি টাকা এবং অবশিষ্ট ৭,৯৩৩ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার ও পিসপিজিসিবিএল-এর নিজস্ব তহবিল থেকে প্রদান করা হচ্ছে।
এ প্রকল্পের দু’টি অংশ আছে-যার একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও অন্যটি বন্দর।