বাসস
  ২৮ জুলাই ২০২৩, ১৫:৪২
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৩, ২৩:৩৫

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ : পাসের হার ৮০.৩৯ শতাংশ

ঢাকা, ২৮ জুলাই, ২০২৩ (বাসস) : চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। 
এবার অংশ্রগ্রহণকারী ২০ লাখ ৪১ হাজার ৪৫০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মোট ১৬ লাখ ৪১ হাজার ১৪০ জন শিক্ষার্থী পাস করেছে। এর মধ্যে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৪০৪ জন ছাত্র এবং ছাত্রী ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৭৩৬ জন।
এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭৮ জন। এর মধ্যে ৮৪ হাজার ৯৬৪ জন ছাত্র এবং ছাত্রী ৯৮ হাজার ৬১৪ জন।
আজ  সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ২০২৩ সালের এসএসসির ফলাফল হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
পরে বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে (আমারাই) এক সংবাদ সম্মেলনে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মোট ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯১৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে গড় পাসের হার ৮০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ২২০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭০ হাজার ৯৭৫ জন এবং ছাত্রী ৮৮ হাজার ২৪৫ জন। মোট পাস করেছে ১৩ লাখ ২২ হাজার ৪৪৬ জন। তাদের মধ্যে ৬ লাখ ১৬ হাজার ৭১ জন ছাত্র এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৬ হাজার ৩৭৫ জন।
এদিকে,মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে মোট অংশগ্রহণকারী ২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ২ লাখ ১২ হাজার ৯৬৪ জন। ছাত্র ১ লাখ ৯৫০ জন এবং ছাত্রী ১ লাখ ১২ হাজার ১৪ জন। পাসের হার ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ২১৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৩ হাজার ১৮৮ জন এবং ছাত্রী ৩ হাজার ২৫ জন।
অন্যদিকে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে মোট ১ লাখ ২২ হাজার ৪৪৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৫ হাজার ৭৩০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৭৯ হাজার ৩৮৩ জন এবং ছাত্রী ২৬ হাজার ৩৪৭ জন। পাসের হার ৮৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ১৪৫ জন। ছাত্র ১০ হাজার ৮০১ জন এবং ছাত্রী ৭ হাজার ৩৪৪ জন।
এবছর সকল শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ মোট ছাত্রের চেয়ে ৪৮ হাজার ৩৩২ জন ছাত্রী বেশী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ছাত্রের চেয়ে ১৩ হাজার ৬৫০ জন বেশী ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।  ৯ টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে উত্তীর্ণ মোট ছাত্রের চেয়ে ৯০ হাজার ৩০৪ জন বেশী ছাত্রী উত্তীর্ণ হয়েছে এবং ছাত্রের চেয়ে ১৭ হাজার ২৭০ জন বেশী ছাত্রী জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। 
বিদেশী অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩৭৫ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৩২০ জন, পাসের হার শতকরা ৮৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৫৫ জন।
এছাড়া মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৭৫ টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ২১ টি।
অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের শিক্ষামন্ত্রী ড.দীপু মনি বলেন, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বিগত বছরগুলোর মতো এবারো সম্পূর্ণ পেপারলেস ফল প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের সরাসরি মোবাইল ফোনে ফল প্রাপ্তীর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়,বোর্ডসমূহ,জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলে পরীক্ষার সার্বিক ব্যবস্থাপনার  ক্রমশ উন্নতির ধারা অব্যাহত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী,কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের  সিনিয়র সচিব মো: কামাল হোসেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানসহ সকল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল তিনভাবে জানতে পারবেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ওয়েবসাইট থেকে তাদের  নিজেদের প্রতিষ্ঠানের ফলাফলের কপি ডাউনলোড করতে পারবেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সহজেই ফলাফল জানতে পারবেন। শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট educationboardresults.gov.bd  এ সহযোগিতায় রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে রেজাল্ট শিট (ফুল মার্কসশিট) ডাউনলোড করতে পারবে। এছাড়া এসএমএসের মাধ্যমেও ফলাফল জানতে পারবে।
আবার, মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে SSC লিখে স্পেস দিয়ে ইংরেজিতে বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর দিতে হবে। এরপর আবারও স্পেস দিয়ে পরীক্ষার বছর লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। 
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা ৩০ এপ্রিল শুরু হয়। এ বছর ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন। এরমধ্যে ছাত্র সংখ্যা ১০ লাখ ২১ হাজার ১৯৭ এবং ১০ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৬ জন ছাত্রী।  এ বছর মোট ১১টি শিক্ষা বোর্ডে মোট কেন্দ্র ৩ হাজার ৮১০টি এবং মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২৯ হাজার ৭৯৮টি। এরমধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে কেন্দ্র ২ হাজার ২৪৪ টি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৭ হাজার ৭৮৬টি। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে মোট কেন্দ্র ৭১৬টি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ৮৫টি। কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে মোট কেন্দ্র ৮৫০টি এবং মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২ হাজার ৯২৭টি। এবার মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ২০৭টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ২০টি। এবছর পূর্নবিন্যাসকৃত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।