শিরোনাম
ঢাকা, ১৭ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস) : জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো ছিল বঙ্গবন্ধুর জীবনের দর্শন।
তিনি বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর সমগ্র চিন্তা-চেতনা জুড়ে ছিল বাঙালি আর বাংলাদেশ। পূর্ব বাংলার শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত, অবহেলিত ও হতদরিদ্র জনপদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই ছিল তাঁর রাজনীতি ও সংগ্রাম। বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যেকোন ত্যাগ স্বীকারে তিনি প্রস্তুত ছিলেন। বারবার ফাঁসির মঞ্চে গিয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতেও তিনি দ্বিধা করেননি৷ এই মহান নেতা নিজের জীবন বাঙালির জন্য উৎসর্গ করেছেন।'
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে স্পিকার আজ এসব কথা বলেন।
স্পিকার বলেন, কিভাবে বাংলাদেশকে স্বাধীন করা যায়, কিভাবে বাঙালি জাতিকে পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্ত করা যায় সেই লক্ষ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু শৈশব থেকে কাজ করে গেছেন। মানুষের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি ছিল তাঁর সংগ্রামের মূল জায়গা। তাঁর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে আমাদের রাজনৈতিক মুক্তি অর্জিত হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার জন্য অর্থনৈতিক মুক্তির কাজ শুরু করেন। শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত দেশ গঠনে তিনি মনোনিবেশ করেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর দেশের সামগ্রিক পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু আত্মনিয়োগ করেন। সমবায়ের মাধ্যমে উন্নয়ন, কৃষি-খাদ্যের উন্নয়ন, প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ, পরিকল্পনা কমিশন গঠন, কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন ইত্যাদি উদ্যোগের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তিনি তৈরি করেছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বাহাত্তরের সংবিধান প্রণয়ন করেন, যা বিশ্বের অনন্য একটি সংবিধান। সংবিধানের চারটি মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা আমাদের স্বাধীনতারই প্রতিফলন।
স্পিকার বলেন, নারী, শিশু অথবা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ কোনো আইন করার প্রয়োজন থাকলে তার ব্যবস্থা সংবিধানে বঙ্গবন্ধু সন্নিবেশ করে গেছেন। তিনি সংসদে নারী সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করে গেছেন। সেই সময়ে এই ধরনের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা অতুলনীয় ও অনন্য।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তার সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে প্রায় ৪৬২র অধিক আইন প্রণয়ন করে গেছেন। শিশু আইন ১৯৭৪, সমুদ্রসীমা নির্ধারণের দিক নির্দেশনা, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন, কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাংলাদেশকে তিনি সদস্য করেছেন। তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে ১০০টির বেশি দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠিত ভীতের ওপর দাঁড়িয়ে আজ তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যাবো- জাতির পিতার ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকীতে এই হোক সকলের প্রত্যয়।
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী চৌধুরীর সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বক্তব্য রাখেন। ওয়েবিনারে ব্যাংকের অন্যান্য পরিচালকগণ ও বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।