শিরোনাম
কেরানীগঞ্জ, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : 'এবার যাব বাড়ি, সঙ্গে যাবে গাড়ি'- এ স্লোাগানকে ধারণ করে শুরু হচ্ছে ঢাকা-ভোলা রুটে যানবাহনসহ যাত্রীবাহী রো রো ফেরির যাত্রা। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে যাত্রীবাহী রো রো ফেরীর যাত্রা উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
'কার্নিভাল ক্রুজ ও কার্নিভাল ওয়েব' এ দুটি রো রো ফেরী নিয়ে যাত্রা শুরু হচ্ছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা-ভোলা (ইলিশা রুটে) জাহাজ দুটি চলাচল করবে।
দেশে প্রথমবারের মতো যানবাহনসহ যাত্রীবাহী রো রো ফেরি সার্ভিস’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যানবাহনসহ যাত্রী পারাপার ফেরি সার্ভিস পৃথিবীর অনেক দেশে আছে। আমাদের দেশে এটি নতুন। এর মাধ্যমে ফেরি সার্ভিসে আন্তর্জাতিক মানের অংশ হয়ে গেলাম আমরা।
উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রসঙ্গ টেনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি আটকে দেয়ার জন্য, উন্নয়ন কর্মকান্ড ব্যাহত করার জন্য নতুন করে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তাই সবাইকে ইস্পাত কঠিন মনোভাব নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ারা দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে, দেশ অন্ধকারের পতিত হয়েছে। আমাদের সৌভাগ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন বলেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আগে এক কিলোমিটার রাস্তা করার জন্য বিদেশীদের কাছে ধর্ণা দিতে হতো। এখন সে অবস্থা নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র বাংলাদেশ বদলে গেছে। পদ্মা সেতু হয়েছে। ঢাকা শহরে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হয়েছে। আগামীতে পাতাল রেল নির্মাণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেখানেই যান না কেন সেখানকার রাষ্ট্রপ্রধানরা থমকে যায়। তাঁর নেতৃত্বের কারণে আমেরিকা, পশ্চিমারা বাংলাদেশকে সমীহ করে। একজন মানুষ তার সঠিক নেতৃত্বে অনেক কিছু বদলে দিতে পারেন। আমাদের স্বপ্ন এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাওয়া।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দ্বীপজেলা ভোলাবাসীর জন্য আজ এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। যানবাহনসহ যাত্রীবাহী রো রো ফেরি চালু হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী উপকূলীয় মানুষের জন্য সব সময় চিন্তা করেন। তাদেরকে মূল ¯্রােতধারায় নিয়ে আসতে তিনি অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ভোলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগে ভোলার মানুষ কেবল রাতে লঞ্চে চলাচল করত, এখন দিনের বেলায় তারা লঞ্চে চলাচল করে। আমরা প্রথম দিনের বেলা লঞ্চ সার্ভিস চালু করেছি।
রাঙ্গাবালী চরমোনতাজ থেকে ঢাকা লঞ্চ চালু করেছেন বলে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সন্দ্বীপে এটি তৈরি করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি অত্যাধুনিক যাত্রীবাহী জাহাজ হাতিয়া, সন্দ্বীপ রুটে চালু করেছে। হাতিয়া, সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়া, টেকনাফের সাবরাং পর্যন্ত নৌ যোগাযোগ সহজতর করার লক্ষ্যে তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে উপকূলীয় অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হবে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মতিউর রহমান, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান এস এম ফেরদৌস আলম, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এম মাকসুদ আলম, বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ইকবাল হোসেন, কার্ণিভাল ক্রুজ লাইন লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ মাসুম খান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, কার্ণিভাল ক্রুজ লাইন লিমিটেড নতুন এ জাহাজটির পরিচালনায় রয়েছে। কার্নিভাল ক্রুজ লাইনের পরিচালক মাসুম খান জানান, যানবাহনসহ যাত্রীবাহী দুটি রো রো ফেরি ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা-ভোলা (ইলিশা) রুটে চলাচল করবে। ঢাকা কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ থেকে প্রতিদিন সকাল আটটায় ছেড়ে যাবে। ভোলার ইলিশা ঘাটে দুপুর দু’টায় পৌঁছবে। ইলিশা থেকে রাত নয়টায় ছাড়বে। ফেরিতে সিট ক্যাপাসিটি রয়েছে ৩শ ৩০ জনের। এর মধ্যে কেবিন ৬০টি, চেয়ার ১শটি। ৩৫টি গাড়ির ধারণ ক্ষমতা রয়েছে।