শিরোনাম
॥ মাহফুজা জেসমিন ॥
ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (বাসস): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক, একজন রাজনীতিক, তবে, এসব কিছুর উর্ধ্বে তিনি একজন মানবতাবাদী মানুষ। একজন মানুষ শেখ হাসিনা হিসেবে তাঁকে মূল্যায়ন করেছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত সুইডিশ একজন বিচারপতি, বাংলাদেশের শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তানরা।
পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত সুইডিশ বিচারপতি সৈয়দ আসিফ শাহকার বলেন, পাকিস্তানকে দেউলিয়া অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে শেখ হাসিনার মতো একজন নেতা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে বাসসকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা শুধু মহান দেশপ্রেমিকই নন, মহান মানবও। বাংলাদেশের মানুষ ভাগ্যবান। তাঁকে নেতা হিসাবে পেয়ে তাদের গর্ব করা উচিত। অনেক জাতি তাঁকে তাদের নেতা হিসাবে পেতে চায় এবং স্বপ্ন দেখে। পাকিস্তানি এমন জাতির মধ্যে একটি। পাকিস্তানে শেখ হাসিনার মতো একজন নেতা দরকার যিনি পাকিস্তানকে দেউলিয়া অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে পারেন এবং উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে আনতে পারেন।”
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রাপ্ত বিচারপতি আসিফ শাহকার শেখ হাসিনাকে একজন আন্তর্জাতিক নেতা হিসেবে- মিশরের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ও সংস্কারক জামাল আবদেল নাসের এবং স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর সাথে তুলনা করে বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তাঁর জন্মদিনে অভিনন্দন জানানো আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের। শুভ জন্মদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।”
শেখ হাসিনা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রফিক উল্লাহ খান প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, তাঁর মধ্যে সাধারণ মানুষকে আপন করে নেওয়ার বিরল ক্ষমতা রয়েছে। আজীবন অসাম্প্রদায়িক এবং ব্যক্তিমানুষ হিসেবে উদার ও পরমতসহিষ্ণু।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা একজন খাঁটি বাঙালি হিসেবে বিশ্বমানবের কল্যাণচিন্তা করেন। বাঙালি নারীর চিরকালীন আদর্শ রূপের অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত তিনি। দেশপ্রেম তাঁর কাছে নিজের জীবন ও অস্তিত্বের সমান্তরাল। তিনি মহিমাময়ী মা।
শেখ হাসিনার লেখক সত্তা সম্পর্কে তিনি বলেন, সাহিত্য-শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতি তাঁর অকৃত্রিম মমত্ববোধ রয়েছে। তিনি একজন সুলেখক। তাঁর রচনাবলিতে বাঙালির আত্মপরিচয়, দেশপ্রেম ও মানবপ্রেম-এর নিদর্শন পাওয়া যায়।
রম্য লেখক, বীর মুক্তিযোদ্ধা হিলাল ফয়েজী বলেন, পরিবারের সবাইকে হারিয়েও অভাবনীয় দৃঢ়তা, সাহসিকতা, ধৈর্যশীলতা আর কৌশলের নমনীয়তায় তিনি অনন্য। রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার নজিরবিহীন সাফল্যের চিরায়ত মুকুট তাঁর প্রাপ্য! ভূরাজনীতির বৃহত্তম শক্তির হুমকির মুখোমুখি তাঁর অনমনীয়তা নতুন পৃথিবীর আভাস দিচ্ছে। হিলাল ফয়েজী তাঁকে “অসাধারণ পরিশ্রমী সাধারণ মেয়ে” হিসেবে আখ্যা দেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ‘আমরা একাত্তরের’ চেয়ারপারসন মাহবুব জামান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একজন “পূর্ণাঙ্গ মানুষ” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ১৯৭৫-এর নৃশংসতায় এ বাবা-মা, ভাইসহ পরিবার পরিজনদের হারিয়েও তার মাত্র ৬ বছর পর শেখ হাসিনা যেভাবে দেশ ও রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন করেছেন সেই সাহসিকতার সাথে তুলনা করবার মতো ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আর তাঁর এই সাহসিকতার প্রতিটি পদক্ষেপ বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকান্ডের বিচার বন্ধে তৈরি করা ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ বাতিল করা, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং সর্বশেষ বিশ^ব্যাংকের অন্যায় অভিযোগের প্রতিবাদে দেশের টাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণের মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনা দেশ ও জাতিকে সারা পৃথিবীর কাছে মহিমান্বিত করেছেন। এই কারণে তিনি চিরকাল মহিমান্বিত হয়ে থাকবেন।
তিনি জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে দূর্নীতিপরায়ন ও স্বেচ্ছাচারী রাজনীতিবিদদের অপসারণ করে আরো একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানান।
মাহবুব জামান বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতির এজেন্ডা পাল্টে দিয়েছেন। আমরা ছাত্রজীবনে যে সব এজেন্ডার দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার কারণে আজ ভিশন, মিশন’র মতো শব্দগুলো রাজনীতির এজেন্ডায় যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশে^ পরিচিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী সিরাজুদ্দীন হোসেনের সন্তান জেনোসাইড বিশেষজ্ঞ তৌহীদ রেজা নূর বলেন, “তিনি কোমলে-কঠোরে মিশ্র মনের অধিকারী একজন মানুষ। দেশের শত্রু, মানবতার শত্রুর কাছে তিনি ত্রাস। কিন্তু, এদেশের সকল সাধারণ মানুষের কাছে তিনি একজন মাটির মানুষ। মানুষ হিসেবে তাঁর চলনবলন ডাউন-টু-আর্থ (সহজ সরল)।”
শেখ হাসিনা সম্পর্কে তিনি বলেন, অনেকগুলো গুণের সমাহার শেখ হাসিনা অনুকরণীয় নেতৃত্ব। তিনি লক্ষ্য অর্জনে অনড়, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও ভিশনারী একজন নেতা। লক্ষ্য অর্জনের জন্য যে কৌশলগত ভাবনার বুনন থাকতে হয় তা তাঁর রয়েছে। তিনি একাধারে সাহসী ও ন্যায়পরায়ণ একজন নেতা। একজন সফল বিশ্ব নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম অনাগতকালের মানুষেরাও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
তিনি বলেন, বিশেষ করে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার মাধ্যমে তিনি সমগ্র জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে স্বপ্নের পদ্মাসেতু সফলভাবে নির্মাণের মধ্য দিয়ে তিনি সারা বিশ্বে বাংলাদেশ বিরোধী শক্তি ও তাঁদের সমর্থকদের কুৎসিত মুখে ছাইচাপা দিয়েছেন। এ তিনটি অনন্য উদ্যোগের কারণে শেখ হাসিনা সামগ্রিক রাজনৈতিক ইতিহাসে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।