শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপির দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামের সমালোচনা করে বলেছেন, বিএনপি বলেছিল আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্য আওয়ামী লীগকে কবরস্থানে পাঠাবে। এখন বিএনপির রাজনীতি কবরস্থানে যাওয়ার সময় এসেছে। আজ শনিবার বিকেলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে কৃষকলীগ আয়োজিত কৃষক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি’র আল্টিমেটাম তো শেষ। ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম কই ? বিএনপি ভুয়া, ৩২ দল ভুয়া। বিএনপি বলেছিল আওয়ামী লীগকে কবরস্থানে পাঠাবে। এখন বিএনপি’র রাজনীতিরই কবরস্থানে যাওয়ার সময় এসেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকারকে যে অবৈধ বলছেন, তাহলে অবৈধ সরকারের কাছে কেন খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদন করেন ? সরকারের অনুমতি নিতে হবে, না নিলে খবর আছে। পালাবার পথ পাবেন না। রাজপথ দখল করার অধিকার বিএনপির নেই বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা রাস্তা দখল করবে তাদের খবর আছে। আগুন নিয়ে আসলে আমরা হাত পুড়িয়ে দেব। যারা ভাঙচুর করতে আসবে তাদের হাত ভেঙে গুড়িয়ে দেব।
বিএনপির হাতে বাংলাদেশ ও দেশের গণতন্ত্রণ নিরাপদ নয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের কাছে জনগণের ভোট নিরাপদ নয়। বাংলাদেশের নিরাপত্তা, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার আদর্শ নিরাপদ নয়। এরা একাত্তরের বাংলাদেশ চায় না। এরা চায় খুন আর সন্ত্রাসের বাংলাদেশ। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশের আলো নিভে যাবে বলে দাবি করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশকে আমরা আর কোনও কালো হাতে ছেড়ে দেব না, অন্ধকারে ফিরে যেতে দেব না। দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জোরদার খেলা হবে। সামনে নভেম্বর, তারপরে ডিসেম্বর, তারপরে জানুয়ারি। ফাইনাল খেলা হবে। কৃষক ভাইয়ের খেলা হবে। প্রস্তুত হয়ে যান। নেত্রী আসছেন, তিনি ডাক দেবেন। তিনি যখন ডাক দেবেন রাস্তায় নেমে আসবেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী সমাবেশে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমাজের অন্যান্য পেশাজীবীর মতো কৃষকরাও আজকে সমানভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তারা চাহিদা অনুযায়ি বীজ-সারসহ সকল উপকরণ পাচ্ছে। একই সঙ্গে কৃষিপণ্যের নায্য মূল্যও পাচ্ছে। আজকে সারা দেশে কৃষকরা যখন সুখে আছে, তখন বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে দেশকে তারা অরাজকতার দিকে ঠেলে দিতে চায়। কৃষক লীগকে এ ব্যাপারে পাহারা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, কৃষক ভাইয়েরা যদি পাহারা দেয়, তাদের সঙ্গে যদি অন্যান্য পেশাজীবীও থাকে, তাহলে বিএনপি আর অরাজকতা করার সাহস পাবে না।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। আজ বাংলাদেশ কৃষিতে, খাদ্যে স্বয়ংসর্ম্পূর্ণ। চালের দাম এই মুহুর্তে নিম্মমুখী। দুই-তিন বছরের চেয়ে অনেক কম। তিনি বলেন, কিছু পণ্যের দাম একটু বেশি, যেমন- পেয়াজ,আলু। এটা উৎপাদনের জন্য। আমি জানি- রিকশ-ভ্যান চালক, নি¤œ আয়ের মানুষদের কষ্ট হচ্ছে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি এগুলোর দাম কমানোর জন্য। তিনি বলেন, এক সময় আমরা খাদ্যের ঝুলি নিয়ে সারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াতাম। আজ সেই বাংলাদেশ খাদ্যের স্বয়ংসম্পূর্ণ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা খুনির দল, আপনারা সন্ত্রাসীদের দল। তাহলে কোন কারণে আপনারা ক্ষমতায় যেতে চান। কথা বলার আগে নিজের চেহারা আয়নায় দেখুন। এই অবৈধ দলের নেতা, কীভাবে সরকারকে অবৈধ বলছে ? দেশের মানুষ আর কখনো আপনাদের দলকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই আপনাদের রাস্তায় আস্ফালন করে লাভ নেই। আর যদি নির্বাচনে বাঁধা দেন, তাহলে রাজপথে প্রতিহত করব।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল। আমাদের এ উন্নয়ন-অগ্রগতিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। আগামী নির্বাচন যথাসময়ে এ সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। কেউ আমাদের নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। আমরা আর কাউকে দেশের কোনও ক্ষতি করতে দিব না।
কৃষক লীগ সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন ও মির্জা আজম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্মল চ্যাটার্জী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন কৃষক লীগ সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি।