শিরোনাম
চাঁদপুর, ৬ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস) : শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেছেন, আধুনিক, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে প্রযুক্তিতে আমাদের দক্ষ হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘এখন প্রযুক্তি এবং ডিভাইসে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে অনেকে। ডিভাইসে আমরা অনেক বেশী সময় কাটাচ্ছি। প্রযুক্তিও আমাদের জীবনে লাগবে। কারণ এখন বিশ্ব চলছে বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিতে। প্রযুক্তিতে আমরা দক্ষ হব। প্রযুক্তিকে আমরা বশ করব। প্রযুক্তির বশ আমরা হব না। কাজেই প্রযুক্তিতে আসক্ত নয়, প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের জীবন মান উন্নতি করতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমদের নতুন নুতন উদ্ভাবন করতে হবে। আমরা এগিয়ে যাব এবং দেশটাকে এগিয়ে নিব। এই জন্য লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা করতে হবে। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার খেলাধুলা হচ্ছে একটি উৎকৃষ্ট উপায়।
শুক্রবার বিকেলে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা পর্যায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বালক-বালিকা অনুর্ধ্ব-১৭ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন ।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দরকার বিজ্ঞান মনস্ক চিন্তায়-চেতনায় আধুনিক, প্রগতিশীল, মানবিক, অসম্প্রদায়িক, সুস্থ, সবল, কর্মঠ প্রজন্ম। এটি গড়বার জন্য যেমন পড়া-লেখায় মনোনিবেশ করতে হবে, উদ্ভাবনী কাজে অংশ নিতে হবে। একই সাথে প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। ঠিক তেমনি তরুণ প্রজন্মকে খেলাধুলার মাধ্যমে সুস্থ্য, সবল ও কর্মঠ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা কিছুদিন আগে প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ের খেলা দেখেছি। তারই ধারাবাহিকতায় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে অনুর্ধ্ব-১৭ খেলা শুরু হচ্ছে। হয়তো এখান থেকেই অনেকে জাতীয় পর্যায়ে খেলবে। ছেলে-মেয়েদের মধ্যে চাঁদপুরের অনেক খেলোয়াড় জাতীয় দলে খেলছে। জাতীয় অনুর্ধ্ব-১৯ এ গোলকিপার জুঁই আমাদের চাঁদপুরের মেয়ে। আজকে এই টুর্নামেন্টে যারা খেলবে তাদের অনেকেই ইনশাআল্লাহ জাতীয় দলে খেলার সুযোগ হবে।
দীপু মনি বলেন, ‘আমরা সকলে মিলে এই খেলোয়াড়দেরকে সম্পূর্ণরূপে সহযোগিতা দিব। আমি তাদের শিক্ষক ও অভিভাবকদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ তাদের সহযোগিতা ছাড়া আমাদের এই খেলোয়াড়রা আজকের এই অবস্থানে আসতে পারতো না। একইসাথে সকল উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই, তাদের সক্রিয় সহযোগিতা এর মধ্যে রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘যাদের নামে এই ফুটবল টুর্নামেন্ট তাদের সম্পর্কেও শিক্ষার্থীদেরকে জানতে হবে। যেমন বঙ্গবন্ধু নিজে একজন দক্ষ ফুটবলার ছিলেন। তিনি বিভিন্ন লীগ ও টুর্নামেন্টে খেলেছেন। তিনি একজন ভালো হকি খেলোয়াড়ও ছিলেন। আমরা জানি তার পুত্র শেখ কামাল একজন ভাল ক্রীড়া সংগঠক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে স্বাধীন দেশ দিয়েছেন সারা জীবনের সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে। আজকে তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি আধুনিক, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ পাচ্ছি।’
দীপু মনি বলেন, ‘আমরা আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। আজকের এই প্রজন্ম আধুনিক ও স্মার্ট বাংলাদেশে বসবাস করবে। তোমরাই কিন্তু সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বার কারিগর। তোমাদের মাধ্যমে সেই বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। কাজেই তোমাদেরকে সেই দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। তোমরা যেমন বঙ্গবন্ধুকে জানবে, তেমনি বঙ্গমাতাকেও জানতে হবে। তার ত্যাগ ও সংগ্রামের কথা জানতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘কি করে একটি দেশ স্বাধীন হয় এবং কত মানুষের ত্যাগের প্রয়োজন হয়। আমরা হুট করে একটা দেশ পেয়ে যাইনি। কাজেই আমাদের সেই কষ্টার্জিত স্বাধীনতার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে আমাদেরকে যার যার অবস্থান থেকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। যার নামে বঙ্গমাতা ফুটবল। সেই মহিয়সী নারী, তিনি বঙ্গবন্ধুর ছাত্র নেতা, যুব নেতা, শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু এবং জাতির পিতা হওয়া এই পুরো পথ পরিক্রমায় একজন ফজিলাতুন্নেছা মুজিব প্রতিটি মুহুর্তে তার পাশে ছিলেন। তাকে সাহস ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি এ্যাড. জাহিদুল ইসলাম রোমান বক্তৃতা করেন।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বশির আহমেদ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবু, জেলা ক্রীড়া অফিসার মো. তারিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শিক্ষক ও অভিভাবকগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন সাংবাদিক এম.আর ইসলাম বাবু।