বাসস
  ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ২১:৩৯

বিমানবন্দরে যাত্রীদেরকে উন্নত সুবিধা প্রদান করাই সরকারের মূল লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা, ৬ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিমানবন্দরে চলাচলকারী যাত্রীদেরকে উন্নত ও আধুনিক যাত্রী সুবিধা প্রদান করাই সরকারের মূল লক্ষ্য। শুধু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরই নয়, দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রানওয়ের শক্তি ও দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি, আধুনিক টার্মিনাল ভবন নির্মাণ ও সম্প্রসারণের কাজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে।
তিনি বলেন, 'সকল বিমানবন্দরে উন্নত প্রযুক্তির নিরাপত্তা- যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। ফলে, বিমানবন্দরে চলাচলকারী যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তা আগের চেয়ে বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি, সমগ্র দেশের আকাশসীমার ওপর সক্রিয় নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা, বিমান পরিচালনায় অধিকতর সুরক্ষিত ও নিরাপদ সেবা প্রদানের লক্ষ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্টেট-অব-দ্য-আর্ট-টেকনোলজি সংযোজনের কাজ চলছে।'
আগামীকাল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩য় টার্মিনালের সফট ওপেনিং উপলক্ষ্যে দেয়া আজ এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  "অত্যাধুনিক সুযোগসুবিধা সংবলিত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৩য় টার্মিনালের সফট ওপেনিং হতে যাচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমি এই টার্মিনাল নির্মাণকাজের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলকে তাঁদের অবদান ও অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য অভিবাদন জানাই। ৩য় টার্মিনাল উদ্বোধনের এ মাহেন্দ্রক্ষণে দেশবাসীকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।"
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল উন্নত দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার সাথে সঙ্গতি রেখে বাঙালি জাতিকে প্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী বিমান পরিবহন অবকাঠামো নির্মাণে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ চলমান রয়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দরে রূপান্তরের জন্য সময়পোযোগী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশকে এ অঞ্চলের বিমান চলাচল কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সর্বোপরি আমরা আধুনিক, নিরাপদ ও আন্তর্জাতিক মানসম্মত বিমান পরিবহন অবকাঠামো গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, জাপান সরকারের জাইকা হতে ঋণ সহায়তায় দুই লাখ ত্রিশ হাজার বর্গমিটার জায়গার ওপর নির্মিত নতুন টার্মিনাল ভবনটি অত্যাধুনিক, বিশ্বের উন্নত যে কোনো বিমানবন্দরের মতো সৌন্দর্যম-িত এবং যাত্রীসেবার জন্য সকল আধুনিক সুযোগসুবিধার সংস্থান রয়েছে এতে। এখানে রয়েছে বহুতল বিশিষ্ট কারপার্কিং ব্যবস্থা, স্বয়ংক্রিয় আমদানি ও রপ্তানি কার্গো ভিলেজ, বিমানের পার্কিং এপ্রোন ও প্যারালাল টেক্সিওয়ের সাথে সংযোগকারী হাইস্পিড টেক্সিওয়ে, গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেম, বোর্ডিং ব্রিজ, বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রসহ নতুন ইউটিলিটি কমপ্লেক্স, ফায়ার ফাইটিং স্টেশন, এয়ারসাইড ও টাউন সাইডে সারফেস রোড নেটওয়ার্ক, মেট্রোরেল স্টেশনের সাথে সংযোগ সাধনের জন্য টানেলসহ আনুষঙ্গিক অত্যাধুনিক অবকাঠামো ও স্থাপনাদি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে বাৎসরিক যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা ৮০ লাখ। তৃতীয় টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে প্রতি বছর নতুন করে যাত্রী সেবার আওতায় আসবেন আরো ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রী, অর্থাৎ সর্বমোট ২ কোটি যাত্রী। ফলে আন্তর্জাতিক রুটের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং নতুন নতুন গন্তব্য বাংলাদেশের আকাশ পথের সাথে যুক্ত হবে। এতে করে, বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে এবং আকাশ পথে দেশের ভবিষ্যৎ এয়ার ট্রাফিক চাহিদা পূরণ ও দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, 'দেশপ্রেমিক জনগণের আস্থা ও সমর্থনের ফলেই আজকে উন্নয়নের এ নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে। যা দেশের বিমান পরিবহন খাতের আধুনিকায়ন এবং যাত্রী সেবায় আন্তর্জাতিকমান নিশ্চিতকরণে বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার বাস্তব প্রতিফলন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ তথা জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব, ইনশাল্লাহ।'