বাসস
  ১৩ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:৩৩

জীবন ঘনিষ্ঠ ও বাস্তবধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণে এগিয়ে আসার আহবান প্রধানমন্ত্রীর

ঢাকা, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জীবন ঘনিষ্ঠ ও বাস্তবধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।   
তিনি বলেন, ‘আগামী প্রজন্মের জন্য দেশকে একটি আধুনিক, জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চলচ্চিত্র নির্মাতাগণ জীবন ঘনিষ্ঠ ও বাস্তবধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণে এগিয়ে আসবেনÑ  দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আমাদের চলচ্চিত্র যে সুনাম অর্জন করেছে, তা আরো উজ্জ্বল হোক-এ আমার প্রত্যাশা।’ 
প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২ প্রদান উপলক্ষ্যে এক বাণীতে এ আহবান জানান। এ উপলক্ষ্যে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা, পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, অভিনেতা-অভিনেত্রী, কলাকুশলী, পরিবেশকসহ চলচ্চিত্র সংশি¬ষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী ও কলাকুশলীদের অভিনন্দন জানান। 
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে গত প্রায় ১৫ বছরে চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা গাজীপুরের কবিরপুরে ১০৫ একর জমির ওপর ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফিল্ম সিটি’ প্রতিষ্ঠা করেছি। এই ফিল্ম সিটির আরো সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের জন্য ৩৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন প্রকল্পের কাজও শুরু হচ্ছে। বিএফডিসি’র নিয়মিত আয় বৃদ্ধি ও চলচ্চিত্র শ্যূটিং স্পটের উন্নয়নসহ নানাবিধ সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘বিএফডিসি কমপে¬ক্স নির্মাণ প্রকল্প’ বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বিএফডিসি’র অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণ এবং চট্টগ্রামে বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন্দ্রে এফডিসি’র কার্যক্রম সম্প্রসারণ নামক আরো একটি প্রকল্প বর্তমানে অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা অত্যাধুনিক বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ভবন নির্মাণ করেছি। আমরা সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণে অনুদানের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছি। চলচ্চিত্রকে আমরা ‘শিল্প’ হিসেবে ঘোষণা করেছি। জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালা ২০১৭ প্রণয়ন করা হয়েছে। আমরা চলচ্চিত্র শিল্পে মেধাবী ও সুদক্ষ কর্মী সৃষ্টির জন্য ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। অসচ্ছল চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশলীদের আমরা নিয়মিত অনুদান দিয়ে যাচ্ছি। 
‘আমরা সেন্সর সংক্রান্ত আইন ও বিধি আধুনিকভাবে তৈরি করেছি। চলচ্চিত্রের সেন্সরের পরিবর্তে সার্টিফিকেশন প্রথা চালু ও বিদ্যমান আইন আরো যুগোপযোগী করে প্রণীত আইনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। অশ্ল¬ীল চলচ্চিত্র নির্মাণ, প্রদর্শন ও পাইরেসি নিয়ন্ত্রণে গঠিত ‘টাস্কফোর্স’ এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ফলে চলচ্চিত্রের পাইরেসি অনেকাংশে বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। সেগুলো যেন কঠোরভাবে মানা হয় সেদিকেও বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি’ Ñবলেন প্রধানমন্ত্রী। 
 শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের অংশ হিসেবে তাঁর জীবনী নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্র ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ দেশের এবং দেশের বাইরের ছয় শতাধিক হলে প্রদর্শিত হয়েছে। ভারতে বাংলা ও হিন্দি ভাষায় মুক্তি পেয়েছে ‘মুজিব’ বায়োপিক। এর নির্মাতা বিখ্যাত ভারতীয় পরিচালক মিস্টার শ্যাম বেনেগালের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন,‘ আমি আশা করি, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এটি একটি শ্রেষ্ঠ অর্জন বলে বিবেচিত হবে। এই সিনেমা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আমাদের চলচ্চিত্র দেশজ উপাদানে সমৃদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের যাত্রাপথের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরবে, জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে। 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ২৭ মার্চ তৎকালীন প্রাদেশিক আইন পরিষদে ‘পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা বিল ১৯৫৭’ উপস্থাপন করেন, যা সে বছরের ৩ এপ্রিল পাস হয়। গঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা, যা বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের ভিত্তি। তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।