শিরোনাম
করাচি, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪ (বাসস ডেস্ক): পাকিস্তানি পুলিশ রোববার কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অন্তত দুই ডজন সমর্থককে আটক করেছে। আটককৃত সমর্থকরা আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে সানে রেখে দেশের বৃহত্তম শহরে সমাবেশ করার চেষ্টা করেছিল।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দলটির পক্ষে সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, দলীয় প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং কয়েক ডজন প্রার্থীকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো সতর্ক করেছে জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার অভাব রয়েছে। শক্তিশালী সামরিক বাহিনী ভোটকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
রোববার, পিটিআই কর্মকর্তারা সমর্থকদের সমাবেশের জন্য পুলিশের অনুমতি না পাওয়া সত্ত্বেও সারা দেশে সমাবেশ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
করাচিতে প্রায় ২ হাজার সমর্থক জড়ো হয়েছিল। আরব সাগরের তীরবর্তী দক্ষিণ বন্দর নগরীতে ২০ মিলিয়নেরও বেশি লোকের বসবাস। সেখান থেকে প্রায় দুই ডজন পিটিআই সমর্থককে পুলিশ আটক করে এবং ট্রাকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে দেখেছেন এএফপি’র সংবাদদাতারা।
পিটিআইয়ের মিডিয়া উপদেষ্টা জুলফিকার বুখারি বলেছেন, রাওয়ালপিন্ডিতেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া, রাজধানী ইসলামাবাদের পার্শ্ববর্তী বিস্তীর্ণ গ্যারিসন শহর এবং পাশাপাশি দেশের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবের অন্যান্য অংশ থেকে পিটিআই সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারের বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
ভোটারদের উদাসীনতা এবং শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ার সংমিশ্রণ ও কয়েকটি গণ সমাবেশের সাথে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে এই মুহুর্তে নির্বাচন অনুষ্ঠান এখন পর্যন্ত নিরর্থক ছিল।
পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান বিলাওয়াল ভুট্রো জারদারির নেতৃত্বে (পিপিপি) জন সমাবেশ খুব বেশি দৃশ্যমান হলেও অথচ প্রচার-প্রচারণায় খুব কমই দেখা যাওয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) সবচেয়ে বেশি আসন নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জারদারি রোববার রাওয়ালপিন্ডিতে কয়েক হাজার মানুষের অংশগ্রহণে একটি সমাবেশ করেন।
কয়েক মাস ধরে দেশের আদালতগুলো বেশিরভাগ সময় রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ায় ব্যাস্ত ছিল। এ সময়ে আদালতগুলো দলগুলোর নির্বাচনী প্রতীকের ব্যবহার থেকে প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার যোগ্যতা পর্যন্ত সমস্ত কিছুকে চ্যালেঞ্জ করে লড়াইয়ের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।
এই সপ্তাহান্তে, বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সাংবাদিক, রাজনৈতিক ভাষ্যকার এবং ব্লগার বলেছেন, নির্বাচনের আগে তারা সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের বিরুদ্ধে একটি ‘বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারণা’ চালাচ্ছেন এমন অভিযোগের ভিত্তিতে দেশের শীর্ষ অপরাধ সংস্থা তাদের তলব করেছে।
তারা ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি থেকে এই সপ্তাহে শুনানির জন্য তলব করার নোটিশ পেয়েছে।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকে সরকার ঘোষণা করেছে, তারা সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষপূর্ণ সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারণার পিছনে সত্যতা যাচাই করতে’ একটি দল গঠন করেছে।
তত্ত্বাবধায়ক তথ্যমন্ত্রী মুর্তজা সোলাঙ্গি বলেছেন, ৫শ’টিরও বেশি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বিচার বিভাগ বিরোধী প্রচারে অংশ নিয়েছে। তিনি আরো বলেছেন, এদের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চলতি মাসে পিটিআই তার ক্রিকেট ব্যাট নির্বাচনী প্রতীক ধরে রাখার জন্য দেশের শীর্ষ আদালতে একটি গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে হেরেছে।