শিরোনাম
জেনেভা, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ (বাসস ডেস্ক): উদ্বেগজনক খাদ্য সংকট, ক্রমবর্ধমান অপুষ্টি এবং রোগের ব্যাপক বিস্তার গাজায় শিশু মৃত্যুর একটি বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। জাতিসংঘ সোমবার সতর্ক করে এ কথা জানিয়েছে।
গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিশ সপ্তাহের মধ্যে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সতর্ক করে দিয়েছিল ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে খাদ্য এবং নিরাপদ পানি ‘অবিশ্বাস্যভাবে দুষ্প্রাপ্য’ হয়ে পড়েছে এবং সমস্ত ছোট বাচ্চারা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফ-এর মানবিক কর্মকান্ডের ডেপুটি হেড টেড চাইবান বলেছেন, ‘গাজা উপত্যকায় এখন শিশু মৃত্যুর প্রতিরোধযোগ্য একটি বিস্ফোরণ প্রত্যক্ষ করতে যাচ্ছে। এটি ইতোমধ্যেই শিশু মৃত্যুর অসহনীয় মাত্রাকে আরো বাড়িয়ে তুলবে।’
শিশুদের খাদ্য ও স্বাস্থ্যের জন্য জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর যৌথ মূল্যায়ন অনুসারে গাজার পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর অন্তত ৯০ শতাংশ এক বা একাধিক সংক্রামক রোগে আক্রান্ত।
মূল্যায়নের দুই সপ্তাহ আগে ৭০ শতাংশের ডায়রিয়া রেকর্ড করা হয়েছিল, যা ২০২২ তুলনায় ২৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি পরিচালক মাইক রায়ান এক বিবৃতিতে বলেছেন, সেখানে ‘ক্ষুধা এবং রোগ একটি মারাত্মক সংমিশ্রণ।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষুধার্ত, দুর্বল এবং গভীরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত শিশুদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি এবং যেসব শিশুরা অসুস্থ, বিশেষ করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত, তারা পুষ্টি ভালোভাবে শোষণ করতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘এটি বিপজ্জনক এবং দুঃখজনক এবং আমাদের চোখের সামনে ঘটছে।’
হামাস পরিচালিত ভূখন্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়,গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ২৯,০০০ এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজা পুষ্টি সংকটে নিমজ্জিত হয়েছে। বাইরের সাহায্য কঠোরভাবে সীমিত করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মূল্যায়ন ইঙ্গিত করেছে যে, উত্তর গাজার দুই বছরের কম বয়সী ১৫ শতাংশেরও বেশি শিশু, ছয়জনের মধ্যে একজন তীব্রভাবে অপুষ্টিতে ভুগছে, আর তিন শতাংশ শিশুর জীবন মৃত্যুর মুখোমুখি।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, জানুয়ারিতে যেহেতু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল, পরিস্থিতি আজ আরও গুরুতর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
মূল্যায়ন অনুসারে, দক্ষিণ গাজায় দুই বছরের কম বয়সী পাঁচ শতাংশ শিশু তীব্রভাবে অপুষ্টিতে ভুগছে।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলো উল্লেখ করেছে, যুদ্ধের আগে গাজার পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে মাত্র ০.৮ শতাংশ তীব্রভাবে অপুষ্টির শিকার বলে বিবেচিত হত।
এতে বলা হয়,‘তিন মাসে জনসংখ্যার পুষ্টির স্থিতিতে এমন পতন বিশ্বব্যাপী নজিরবিহীন।’