শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ৫ মে ২০২৪ (বাসস) : প্রথম ম্যাচের মত দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও সহজ জয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ডাবল লিড নিয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। আজ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে হারিয়েছে জিম্বাবুয়েকে। প্রথম ম্যাচ ৮ উইকেটে জিতেছিলো টাইগাররা।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৮ রান করে জিম্বাবুয়ে। জবাবে ৯ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে ১৪২ রান তুলে জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচের মত চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেও টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
ব্যাট হাতে সাবধানী শুরু করে প্রথম ৩ ওভারে মাত্র ৭ রান তুলে জিম্বাবুয়ে। চতুর্থ ওভারের শেষ বলে রিভিউ নিয়ে জিম্বাবুয়ের ওপেনার তাদেওয়ানাশে মারুমানিকে ২ রানে লেগ বিফোর আউট করে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার তাসকিন আহমেদ।
দ্বিতীয় উইকেটের জন্য অষ্টম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় বাংলাদেশকে। টেস্ট মেজাজে খেলা আরেক ওপেনার জয়লর্ড গাম্বিকে শিকার করেন পেসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ৩০ বলে ১৭ রান করে মিড অফে টাইগার অধিনায়ক শান্তকে ক্যাচ দেন গাম্বি।
গাম্বিকে হারানোর ক্ষত ভুলতে না ভুলতে দশম ওভারে জিম্বাবুয়ের জোড়া উইকেট তুলে নেন স্পিনার রিশাদ হোসেন। নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা (৩ ) এবং তৃতীয় ডেলিভারিতে ক্লাইভ মানদান্দেকে খালি হাতে বিদায় দেন রিশাদ।
রিশাদের জোড়া আঘাতের পরই উইকেট শিকারে মাতেন আরেক স্পিনার মাহেদি হাসান। দশম ওভারে মাহেদির বলে রিভার্স সুইপ করে এক্সট্রা কভারে লিটন দাসকে ক্যাচ দেন ১৩ রান করা ক্রেইগ আরভিন। ৪২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে আগের ম্যাচের মত এবারও মহাবিপদে পড়ে জিম্বাবুয়ে।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন বেনেট ও জোনাথন। বাংলাদেশ দলের পাঁচ বোলারের উপরই চড়াও হন জিম্বাবুয়ের সাবেক ক্রিকেটার অ্যালিস্টার ক্যাম্পেবেলের ছেলে জোনাথন। ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা আদায় করে নেন তিনি। ১৮তম ওভারে শরিফুলের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে মিড উইকেটে সাইফুদ্দিনকে ক্যাচ দেওয়ার আগে ২৪ বলে ৪৫ রান করেন জোনাথন। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে বেনেটের সাথে ৪৩ বলে ৭৩ রান যোগ করেন জোনাথন।
দলীয় ১১৫ রানে জোনাথন ফেরার পর জিম্বাবুয়েকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দিয়েছেন বেনেট। সাইফুদ্দিনের করা ইনিংসের শেষ ওভারে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৮ রান তুলেন বেনেট ও এন্সলি এনদলোভু। ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৮ রানের সংগ্রহ পায় জিম্বাবুয়ে। ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ২৯ বলে অপরাজিত ৪৪ রান করেন বেনেট। ১টি চারে ৫ রানে অপরাজিত থাকেন এনদলোভু।
বাংলাদেশের তাসকিন ১৮ রানে ও রিশাদ ৩৩ রানে ২টি করে উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট শিকার করেন শরিফুল, মাহেদি ও সাইফুদ্দিন।
জবাবে বাংলাদেশকে ৫ দশমিক ১ ওভারে ৩৪ রানের সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান। এরপর বৃষ্টিতে কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। খেলার শুরুর পর এনদলোভুর করা ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বলে তুলে মারতে গিয়ে বেনেটকে ক্যাচ দেন ১টি করে চার-ছক্কায় ১৯ বলে ১৮ রান করা তানজিদ।
৪১ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে জুটি গড়ার পথে নবম ওভারে ক্যাচ দিয়ে জঙ্গির হাতে জীবন পান লিটন। কিন্তু জঙ্গির করা পরের ওভারে সাজঘরে ফিরেন শান্ত ও লিটন। ১টি ছক্কায় শান্ত ১৬ এবং ২টি চার ও ১টি ছক্কায় লিটন ২৫ বলে ২৩ রান করেন।
৬২ রানে তাদের বিদায়ের পর জুটি বাঁধেন তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলি। ২৩ বলে ৩১ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হন তারা। ১টি ছক্কায় ১৩ রান করা জাকের বোল্ড আউট হন এনগারাভার।
জাকের ফেরার সময় ম্যাচ জিততে ৩৭ বলে জয় থেকে ৪৬ রান দরকার ছিলো বাংলাদেশের। পঞ্চম উইকেটে ২৯ বলে ৪৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন হৃদয় ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় হৃদয় ২৫ বলে অপরাজিত ৩৭ রান করেন। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৬ বলে অনবদ্য ২৬ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। জিম্বাবুয়ের জঙ্গি ২ উইকেট নেন।
আগামী ৭ মে একই ভেন্যুতে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে।
জিম্বাবুয়ে ব্যাটিং :
গাম্বি ক নাজমুল ব সাইফুদ্দিন ১৭
মারুমানি এলবিডব্লু ব তাসকিন ২
আরভিন ক লিটন ব মাহেদি হাসান ১৩
সিকান্দার ক লিটন ব রিশাদ ৩
মাদান্দে ক তানজিদ ব রিশাদ ০
বেনেট অপরাজিত ৪৪
জোনাথন ক সাইফুদ্দিন ব শরিফুল ৪৫
জঙ্গি ক হৃদয় ব তাসকিন ২
এন্দলোভু অপরাজিত ৫
অতিরিক্ত (লে বা-৬, ও-১) ৭
মোট (২০ ওভার, ৭ উইকেট) ১৩৮
উইকেটের পতন: ১-১৫ (মারুমনি), ২-৩০ (গাম্বি), ৩-৩৬ (সিকান্দার), ৪-৩৬ (মাদান্দে), ৫-৪২ (আরভিন), ৬-১১৫ (জোনাথন), ৭-১২০ (জঙ্গি)।
বাংলাদেশ বোলিং :
শরিফুল : ৪-০-২৬-১,
মাহেদি : ৪-০-১৮-১,
তাসকিন : ৪-০-১৮-২ (ও-১),
সাইফুদ্দিন : ৪-০-৩৭-১,
রিশাদ : ৪-০-৩৩-২।
বাংলাদেশ ব্যাটিং :
লিটন ক ক্যাম্পবেল ব জঙ্গি ২৩
তানজিদ ক বেনেট ব এন্দলোভু ১৮
নাজমুল ক বার্ল ব জঙ্গি ১৬
হৃদয় অপরাজিত ৩৭
জাকের আলী ব এনগারাভা ১৩
মাহমুদুল্লাহ অপরাজিত ২৬
অতিরিক্ত (নো-১, ও-৮) ৯
মোট (১৮.৩ ওভার, ৪ উইকেট) ১৪২
উইকেটের পতন: ১-৪১ (তানজিদ হাসান), ২-৬১ (নাজমুল), ৩-৬২ (লিটন), ৪-৯৩ (জাকের)।
জিম্বাবুয়ে বোলিং :
এনগারাভা : ৪-০-৩২-১ (ও-১),
মুজারাবানি : ৩.৩-০-১৯-০ (ও-২),
এনদলোভু: ৩-০-২৫-১ (ও-১),
রাজা : ৪-০-৩১-০ (ও-১),
জঙ্গি : ৪-০-৩৫-২ (নো-১)।
ফল : বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : তাওহিদ হৃদয়(বাংলাদেশ)।
সিরিজ : পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ।