বাসস
  ১৪ জুন ২০২৪, ২০:৩২
আপডেট : ১৫ জুন ২০২৪, ১২:০৫

বিএসএমএমইউ সুপার হাসপাতালকে বিশ্বমানে উন্নীত করা হবে : ভিসি

॥ মোঃ মোর্শেদুর রহমান ॥
ঢাকা, ১৫ জুন, ২০২৪ (বাসস) : উন্নত স্বাস্থ্যসেবার প্রত্যাশায় বিপূল অর্থ ব্যয় করে বিদেশে যাওয়া নিরুৎসাহিত করতে দেশে উন্নত চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দক্ষ চিকিৎসক  নিয়োগ ও আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তিতে সজ্জিত করার মাধ্যমে বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালকে একটি বিশ্বমানের স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করা হবে।
বিএসএমএমইউ’র ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. দীন মো. নুরুল হক বাসস’কে বলেন, ‘বেশ কিছু মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার জন্য বিদেশে যাওয়ার এই প্রবণতা রোধ করা।’
বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে অত্যন্ত দক্ষ চিকিৎসক ও উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত করা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটিকে কর্পোরেট আকার ও উপযোগিতা দিয়ে পুনর্গঠন করতে চাই যাতে করে উন্নত স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যাশায় যারা চিকিৎসার জন্য ভারতসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন, তাদের আকৃষ্ট করা যায়।
কম খরচে বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে প্রথম বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল উদ্বোধন করেন।
অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ আরো বলেন, ‘বিএসএমএমইউ’র ভিসি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কিছু সমস্যা চিহ্নিত করেছি এবং হাসপাতালটিকে বিশ্বমানে উন্নীত করার উদ্যোগ নিচ্ছি।’
উপাচার্য বলেন, বিদ্যমান নিয়োগ পদ্ধতি অনুসারে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য চিকিৎসা পেশাজীবীদের নিয়োগ দিতে পারে, তবে বিএসএমএমইউ উপাচার্যের বিভিন্ন দেশ থেকে চুক্তিভিত্তিক উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন চিকিৎসক, সার্জন ও অন্যান্য চিকিৎসা পেশাজীবীদের নিয়োগ প্রদানেরও ক্ষমতা বা এখতিয়ার থাকা দরকার।
তিনি আরো বলেন, বিদেশি বিশেষজ্ঞ আনার মাধ্যমে বিএসএমএমইউ সহযোগিতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে বিদ্যমান কর্মীদের দক্ষতা ও জ্ঞান আরো উন্নত করতে পারে।
আমরা চুক্তি ভিত্তিক আমাদের দেশের অভিজ্ঞ ও দক্ষ চিকিৎসকদের নিয়োগ দিতে পারি উল্লেখ করে অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ বলেন, বর্তমান নিয়োগ পদ্ধতি পরিবর্তন না হলে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি দেশের অন্যান্য সাধারণ হাসপাতালের মতই থেকে যাবে।
ভিসি আরো বলেন, ‘বিশ্বমানের চিকিৎসা দিতে হলে আমাদের অবশ্যই পরিষেবা চার্জ বাড়াতে হবে। সরকারি হাসপাতালগুলো নাম মাত্র পরিষেবা চার্জ নিয়ে থাকলেও সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল গুলোর মধ্যে স্কয়ার, ইউনাইটেড, ও এভারকেয়ার হাসপাতালের মতো শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালগুলো অতিরিক্ত চার্জ নিয়ে থাকে।’
দীন মোহাম্মদ আরো বলেন, ‘ঢাকা মহনগরীর শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় সাশ্রয়ী বিকল্প হওয়ার লক্ষ্যে ও সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ কম পরিষেবা চার্জ অফার করে। আমাদের মূল লক্ষ্য হল- চিকিৎসার জন্য যেসব রোগী বিভিন্ন দেশে যেতে বিপূল অর্থ ব্যয় করে থাকে, তাদের বিদেশে যাওয়া বন্ধ করা।’
বিএসএমএমইউ’র প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) প্রফেসর মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘ব্যাপক প্রচারণার অংশ হিসেবে বিএসএমএমইউ চিকিৎসা প্রযুক্তির সংস্কার, উচ্চমানের পেশাজীবী ও দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের মাধ্যমে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটিকে একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলা হবে।’
সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি চালু হওয়ার পর পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবী না থাকায় এটি সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে।
অধ্যাপক আতিকুর বলেন, বিএসএমএমইউ’র চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে খ-কালীন ভিত্তিতে কাজ করছেন। আরো ২,৭৫৮ জন মেডিকেল পেশাজীবী নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলোকে বৃহৎ পরিসরে সেবা নিশ্চিত করার জন্য স্বাস্থ্য ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান নিয়োগ ব্যবস্থা অনুসরণ করে আমরা এই ২,৭৫৮ জন মেডিকেল পেশাজীবী নিয়োগ করব।’
বিএসএমএমইউ’র ভিসিকে সমর্থন করে অধ্যাপক আতিকুর বলেন, উন্নত চিকিৎসা সেবা গ্রহণের জন্য বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে বিশ্বমানে উন্নীত করার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ডাক্তার, সার্জন নিয়োগ করবে।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবাকে ইমার্জেন্সি মেডিকেল সেন্টার, কার্ডিওভাসক্যুলার ও স্ট্রোক সেন্টার, হেপাটোবিলিয়ারি ও লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টার, কিডনি ডিজিজ সেন্টার এবং মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রসহ মোট পাঁচটি কেন্দ্রে ভাগ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পাঁচটি স্বাস্থ্য সেবা পরিষেবা কেন্দ্রই বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা প্রদানে সর্বাধুনিক ও উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জামে সজ্জিত।
অধ্যাপক আতিকুর বলেন, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৭৫০টি শয্যা, একশ’ শয্যার ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) ও ৬৪টি কেবিন রয়েছে।