বাসস
  ০৭ জুলাই ২০২৪, ২০:২৯

জগন্নাথদেবের ৯ দিনব্যাপী রথযাত্রা উৎসব শুরু

ঢাকা, ৭ জুলাই, ২০২৪ (বাসস) : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসব শুরু হয়েছে। 
আজ রোববার রাজধানী ঢাকার স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরে এ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিকেল ৩টার দিকে অগণিত ভক্তরা স্বামীবাগ ইসকন মন্দির পথকে জগন্নাথ, বলদেব ও শুভদ্রাকে বহনকারী রথ ঢাকেশ্বরী মন্দিরের দিকে রওয়ানা দেন। এ সময় ভক্তরা নেচে গেয়ে কীর্তন করতে থাকেন।
সনাতনী রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা। ৯ দিনব্যাপী এই উৎসব আগামী ১৫ জুলাই উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে এ উৎসব শেষ হবে। 
রোববার ইসকন আশ্রমে বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মধ্য দিয়ে রথযাত্রা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। দুপুরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। 
ইসকন বাংলাদেশের সভাপতি সত্য রঞ্জন বাড়ৈ-এর সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভা শেষে রথযাত্রা উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের উপ-রাষ্ট্রদূত পবন বাধে। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সংসদ সদস্য সাঈদ খোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 
শোভাযাত্রাটি জয়কালি মন্দির, মতিঝিল শাপলা চত্বর, দৈনিক বাংলার মোড়, বঙ্গভবন মোড়, গুলিস্থান, মাজার রোড, বঙ্গবাজার, সরকারি কর্মচারি হাসপাতাল, হাইকোর্ট মোড়, দোয়েল চত্বর, জগন্নাথ হল ও পলাশী হয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, জগন্নাথদেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এ বিশ্বাস থেকেই রথের ওপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমূর্তি  রেখে রথ নিয়ে যাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
শুভ রথযাত্রা উপলক্ষে ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) রথযাত্রা উপলক্ষে ৯ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠান মালায় রয়েছে হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামানায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, পদাবলী কীর্তন, আরতি কীর্তন, ভাগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পাঠ, ধর্মীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও ধর্মীয় নাটক মঞ্চায়ন।
রথযাত্রার মহোৎসবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বরাবরের মতো পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এছাড়া শোভাযাত্রাসহ উৎসব উপলক্ষে নিরাপত্তায় নিজস্ব পাঁচশতাধিক প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত ছিলো।
আগামী ১৫ জুলাই বিকাল ৩টায় উল্টো রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা একই পথে বিপরীত দিক থেকে অর্থাৎ ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে স্বামীবাগ আশ্রমে আনা হবে। 
এছাড়া পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের জগন্নাথ জিউ ঠাকুর মন্দির, জয়কালী রোডের রামসীতা মন্দির এবং শাঁখারীবাজার একনাম কমিটিসহ রাজধানীর অন্যান্য মন্দির ও দেশের বিভিন্ন মন্দিরেও রথটান অনুষ্ঠিত হয়েছে।