বাসস
  ৩০ জুলাই ২০২৪, ১২:৫৯

ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন যুদ্ধাপরাধী উইলিয়াম ক্যালি মারা গেছেন

ওয়াশিংটন, ৩০ জুলাই, ২০২৪ (বাসস ডেস্ক) : ভিয়েতনাম যুদ্ধে মাই লাই গণহত্যা ট্র্যাজেডিতে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত মার্কিন সেনাবাহিনীর সাবেক লেফটেন্যান্ট উইলিয়াম ক্যালি (৮০) মারা গেছেন। সোমবার একটি মার্কিন সংবাদপত্র এ কথা জানিয়েছে।
‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ বলেছে, ক্যালি গত ২৮ এপ্রিল ফ্লোরিডার গেইনসভিলে মারা গেছেন। তবে সাম্প্রতিক পাবলিক রেকর্ড অনুসন্ধান না হওয়া পর্যন্ত তার মৃত্যুর কথা প্রচার করা হয়নি।
ক্যালি মার্কিন সেনাবাহিনীর একমাত্র সদস্য যিনি মাই লাই গণহত্যার যুদ্ধাপরাধের জন্য ১৯৭১ সালে দোষী সাব্যস্ত হন।যা ছিল মার্কিন সামরিক ইতিহাসের অন্যতম অন্ধকার অধ্যায়।
ভিয়েত কং শত্রু সৈন্যরা বেসামরিকদের মধ্যে ছদ্মবেশে রয়েছে এই ভুল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৬৮ সালের ১৬ মার্চ ক্যালির ব্রিগেড মাই লাই গ্রামে প্রবেশ করে।
সেই সময় ২৪ বছর বয়সী ক্যালি সৈন্যদের  গ্রামবাসীদের হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিল যদিও তারা শত্রু যোদ্ধাদের কোন প্রমাণ খুঁজে পায়নি।
এই গণহত্যার সাথে জড়িত ছিল শত শত নিরীহ ভিয়েতনামীকে নির্যাতন, ধর্ষণ ও জবাই করা।
পরবর্তী এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউএস আর্মি মাই লাই-এর ঘটনাগুলো ঢেকে রাখে।
গণহত্যার মৃত্যুর সংখ্যা বিতর্কিত রয়ে গেছে। তবে মার্কিন অনুমান অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ৩৪৭ থেকে ৫০৪ নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিক। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল মহিলা, শিশু বা বয়স্ক পুরুষ।
ক্যালি পরে একটি উচ্চ পর্যায়ের কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হন। সে সময়ে তিনি বলেছিলেন, তিনি তার উর্ধ্বতনদের আদেশ পালন করছেন।
যদিও গণহত্যার সাথে সম্পর্কিত অন্য ১২ জন সামরিক অফিসারকে অপরাধের জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। পরে শেষ পর্যন্ত সকলকেই ফৌজদারি অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের সাথে জড়িত নয় এমন ২২ জনকে হত্যার জন্য ক্যালিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং তাকে আজীবন কঠোর শ্রমের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন কয়েকদিন পর তার সাজা কমিয়ে দেন এবং তিন বছর গৃহবন্দি থাকার পর অবশেষে তিনি মুক্তি পান।
তার মুক্তির পর ক্যালি জর্জিয়ার কলম্বাসে বসতি স্থাপন করেন। যেখানে তার জীবনের বেশিরভাগ সময় অজ্ঞাত রয়ে গেছে।  
২০০৯ সালে একটি স্থানীয় সংবাদপত্র বৃহত্তর কলম্বাসের কিওয়ানিস ক্লাবে ক্যালির দেওয়া একটি বক্তৃতা সম্পর্কে রিপোর্ট করেছিল। যে সময় তিনি গণহত্যায় তার ভূমিকার জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন।