বাসস
  ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫১

মা ইলিশ রক্ষায় শনিবার মধ্য রাত থেকে ২২দিন মেঘনায় সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ

লক্ষ্মীপুর. ১২ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস): জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় শনিবার মধ্যরাত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২দিন মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ নিষেধাজ্ঞার সময় প্রতি জেলে ভিজিএফের চাল পাবে ২৫ কেজি। এ সময়ে বরাদ্ধকৃত চাল সঠিক তালিকা তৈরি করে দ্রুত তা বাস্তবায়নের দাবি জানান জেলেরা।


তবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করার জন্য নদীতে মৎস্য বিভাগ, উপজেলা-জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও কোষ্টগার্ডের সমন্বয়ে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করা হবে। গত বছরের অভিযান সফল হওয়ায় মাছের উৎপাদন বাড়ছে বলে দাবি করেন তিনি।


জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলায় ৫২ হাজার জেলে রয়েছে। এদের মধ্যে নিবন্ধিত জেলে ৪৩ হাজার তিনশ । এসব জেলে মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায়  শনিবার মধ্য রাত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত  ২২দিন মেঘনা নদীতে সকল ধরনের জাল ফেলা ও মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১শ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। এ এক”শ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময় এসব এলাকায় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাত করন ও মজুদ করন  নিষিদ্ধ রয়েছে। জেলেদেরকে সচেতন করার জন্য নদী এবং উপকূলবর্তী এলাকায় মাইকিং ও পোষ্টারিংসহ সব ধরনের প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য বিভাগ। নিষেধাজ্ঞার সময় প্রতি জেলেকে ২৫ কেজি হারে খাদ্য সরবরাহ করা হবে। এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ হাজার ৫শ মে.টন।


মজুচৌধুরীরহাট ঘাট এলাকার জেলে সোহেল হোসেন ও মারফত উল্যাহ বলেন, জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় এবং উৎপাদন বাড়াতে সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেটা মেনে জেলেরা নদীতে যাবে না। সরকারের আইন মানবেন। তব জেলেদের পুনর্বাসন করার কথা সেটা এখন পর্যন্ত হয়ন্।ি যে সংখ্যক জেলে রয়েছে, সে অনুযায়ী যেন প্রত্যেক জেলে সরকারী সহায়তা পায় সেটাই আশা করেন তারা। নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের জন্য বরাদ্ধ চাল সঠিক তালিকা তৈরি করে  দ্রুত যেন তা পেতে পারে সেটা নিশ্চিত করার দাবি জানান।


এদিকে অনেক জেলে বলেন, বর্তমানে যেসব ইলিশ পাওয়া যায় সেগুলো আকারে অনেক ছোট। পাশাপাশি ডিমওয়ালা ইলিশ কম পাওয়া যায়। যদি এ অভিযান আরো ১০দিন পরে দেয়া হতো। তাহলে মা ইলিশ রক্ষায় ও জাটকা সংরক্ষণের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সেটা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হতো বলে দাবি করেন তারা।


জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করার জন্য নদীতে মৎস্য বিভাগ,উপজেলা-জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও কোষ্টগার্ডের সমন্বয়ে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ সময়ে জেলেদের জন্য ২৫ কেজি হারে খাদ্য সয়ায়তা দেয়া হবে। এরপরও যারা আইন অমান্য করে নদীতে যাবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। গত বছরের অভিযান সফল হওয়ায় ইলিশের উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়েছে। এবারও অভিযান সফল হলে অধিক পরিমান ইলিশ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।


জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার বলেন, ইতিমধ্যে বরাদ্ধকৃত ভিজিএফের চাল জেলেদের মধ্যে বিতরণ করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি হারে চাল দেয়া হবে। কেউ বাধ যাবেনা।