বাসস
  ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২১:৩০
আপডেট  : ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২১:৩৪

শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করে শহিদ আবু সাঈদ প্রমাণ করলেন তাদের আন্দোলন সঠিক ছিল

রংপুর, ১৪ অক্টোবর,২০২৪ (বাসস): বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ‘শহিদ আবু সাঈদ’ মরে গিয়েও ‘মেধা-যোগ্যতায়’ প্রমাণ করলেন তাদের আন্দোলন সঠিক ছিল। ওই আন্দোলন চলাকালে পতিত স্বৈরাচারের ‘লালিত’ ‘সন্ত্রাসী-গুন্ডা’ পুলিশের গুলিতে নিহত রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী সাহিত্যের ছাত্র আবু সাঈদ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন’র লিখিত পরীক্ষায় পাস করে জাতির সামনে  তুলে ধরলেন চাকরির ক্ষেত্রে ‘কোটা’ নয়, মেধা’র প্রাধান্য পাওয়া উচিত। 

আজ সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ওয়েবসাইটে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার লিখিত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ফল প্রকাশের পর জানা গেল, শহিদ আবু সাঈদ ‘ইবতেদায়ী সহকারী শিক্ষক’ হিসেবে লিখিত পরীক্ষায় পাস করেছেন।

এই ফলাফল প্রকাশের পর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন আবেগাপ্লুত হয়ে তার ফেসবুক ওয়ালে একটি আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন। তিনি এ পোস্টে লিখেছেন, ‘গত ১১ জুলাই ক্যাম্পাসে মিছিল করার পর ১২ তারিখে ( জুলাই-১২) ছিল আবু সাঈদ ভাইয়ের শিক্ষক নিবন্ধন’র লিখিত পরীক্ষা। আমরা ওইদিন সকালে মিটিং করবো। তো আবু সাঈদ ভাই বলছিলেন, ‘পরীক্ষা দেব কি না-কিছুই পড়িনি আন্দোলনের কারণে।’ আমরা বললাম, ‘ভাই পরীক্ষা দিয়ে আসেন, আমরা বিকেলে মিটিং করবো।’ ১১ তারিখ (জুলাই-১১) ছাত্রলীগের চড়-থাপ্পড়-মার খাওয়ার স্ট্রেস নিয়ে ১২ তারিখ পরীক্ষা দিতে যায় সাঈদ ভাই। আজ ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু আবু সাঈদ ভাই নাই। ‘আমরা শুধু বীর সাঈদ ভাইকে হারাইনি, হারিয়েছি মেধাবী শিক্ষার্থীকে।’

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর শওকত আলী এ প্রসঙ্গে বার্তা সংস্থা বাসস’কে বলেন, ‘শহীদ আবু সাঈদ একজন জাতীয় বীর, নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো সে মেধারও বীর । আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করুন।’

সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে চলতি বছরের জুলাই মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে আন্দোলন শুরু হয়, মেধাবী শিক্ষার্থী আবু সাঈদ গত ১৬ জুলাই নিজের জীবন দিয়ে সেই আন্দোলনকে গতিশীল করে নিয়ে যায় নতুন মাত্রায়। পুলিশের গুলিতে তার নিহত হওয়ার ঘটনায় সারাদেশের বিক্ষুব্ধ ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় নেসে আসে। এর ফলে ‘কোটা বিরোধী’ আন্দোলন নতুন রূপ পেয়ে হয় “বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন”। আর এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংহতি ও সমর্থন বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে সরকার বিরোধী সকল রাজনৈতিক দলসহ সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং সাধারণ জনতা আন্দোলনে যোগ দেন।