বাসস
  ২২ অক্টোবর ২০২৪, ২২:২২

সীসা দূষণের বিরুদ্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন : বিশেষজ্ঞ অভিমত

রাজশাহী, ২২ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস) : বিশেষজ্ঞরা আজ এক সমাবেশসহ মানববন্ধনে জনস্বাস্থ্য, বিশেষ করে শিশুদেরকে ক্রমবর্ধমান সীসা দূষণের মারাত্মক প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য একটি  সমন্বিত  পদক্ষেপ গ্রহনের আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেন,  ৬০ শতাংশ শিশুর রক্তে, মস্তিষ্কের বিকাশ ব্যাহতকারী, উচ্চ সীসা মাত্রায় আক্রান্তের হিসেবের নিরিখে, বাংলাদেশ সীসা দূষণে বিশে^র  চতুর্থ স্থানে রয়েছে। বার্ষিক ১ লাখ ৪০  হাজার প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ার অন্যতম কারন সীসার মাত্রাবৃদ্ধি । এতে গর্ভবতী মহিলারাও  উল্লেখযোগ্য ভাবে ঝুঁকির সম্মুখীন হন। সীসা-সম্পর্কিত স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর  অর্থনৈতিক প্রভাব বার্ষিক ২৮.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বলে ধারনা করা হচ্ছে। 

বক্তারা সীসা দূষণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে সরকার এবং নীতিনির্ধারকদের জনসচেতনতা এবং সীসাযুক্ত পণ্য বয়কটকে উতৎসাহিত করার পাশাপাশি সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইউনিসেফের সহায়তায় ইয়ুথনেট গ্লোবাল এবং পিওর আর্থ বাংলাদেশ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) যৌথভাবে আন্তর্জাতিক সীসাদূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ উপলক্ষে “উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সূচনা সীসামুক্ত জীবন” প্রতিপাদ্য নিয়ে এই সমাবেশের আয়োজন করে।

রাবি নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাদিয়া আউয়াল ত্রিশা এবং ইউনিসেফের মোখলেসুর রহমান পিন্টু  এই বিষয়ে তাদের দক্ষতা ছড়িয়ে দেওয়ার ফোকাল ব্যক্তি হিসাবে সভায় বক্তব্য রাখেন।

মোখলেছুর রহমান শিশুদের ওপর সীসার নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরে বলেন যে গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধ সবাই সীসা দূষণের শিকার। তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যরা, যারা সীসা-সম্পর্কিত কাজের সাথে জড়িত, যেমন পেইন্ট বা সীসা ব্যাটারি পুনর্ব্যবহারকরন কাজ, তাদের  মাধ্যমে প্রায়শই সীসা বাড়িতে  আসে, যা শিশুদের স্বাস্থঝুঁকির কারন হতে পারে।

রাদিয়া আউয়াল ত্রিশা তার বক্তব্যে  রাষ্ট্রীয় এবং ব্যক্তিগত উভয় স্তরেই সীসা দূষণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির গুরুত্বের উপর জোর দেন। তিনি বলেন, সীসা দূষণ একটি অপেক্ষাকৃত নতুন সমস্যা, তাই ব্যাপক সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সীসা দূষণের কারণে মৃত্যুর পরিসংখ্যান উল্লেখ করে তিনি বলেন, সীসার পরোক্ষ প্রভাবে যত মানুষ  হার্ট ও ফুসফুসের রোগ  বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তাও উদ্বেগজনক। তিনি অভিমত প্রকাশ করে বলেন  মাটি, জল এবং বায়ু যাতে দূষিত না থাকে, তা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা দরকার। একইভাবে  নদী, স্রোত এবং জলের উৎস্যগুলিকে দূষণ থেকে মুক্ত রাখার জন্য বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত।  দৈনন্দিন জিনিসগুলো  যাতে সীসা মুক্ত হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে  অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।