শিরোনাম
ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : আজ ১৪ ডিসেম্বর, শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এইদিনে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধা শূন্য করতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এই দেশীয় দোসররা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। এদিন দেশের সূর্য সন্তান শিক্ষক, বিজ্ঞানী, চিন্তক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ক্রীড়াবিদ, সরকারি কর্মকর্তাসহ দেশের বহু কৃতী সন্তানকে হত্যা করা হয়।
স্বাধীনতার পর থেকে ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। আজ সারাদেশে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বিদেশে বাংলাদেশের হাইকমিশন, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ছাত্র সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ রায়ের বাজার বধ্যভূমি, মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধসহ বিভিন্ন স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এছাড়াও আলোচনা সভা, মৌন মিছিল ও বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে যথাযথ মর্যাদায় আজ ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার বাণী পাঠ, আলোচনা সভা ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী এতে অংশ নেন। আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হাইকমিশনার ইকবাল হোসেন খান ও উপ হাইকমিশনার মোঃ আমিনুল ইসলাম খান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। সভার শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ এবং শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এতে শহিদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. সাজেদা বানু । তিনি শহিদ বুদ্ধিজীবী ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. গিয়াসউদ্দিন আহমেদের বোন।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে আজ সকালে ইউজিসি কর্তৃপক্ষ মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীম উদ্দিন খান ও প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমান, ইউজিসি সচিব ড. মোঃ ফখরুল ইসলাম, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া, ইন্টারন্যাশনাল কোলাবোরেশন বিভাগের পরিচালক মোছাঃ জেসমিন পারভীনসহ অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের নেতৃত্বে সকাল ৮:০০ টায় মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং সকাল ১০:০০ টায় রায়ের বাজার বধ্যভূমি শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুস্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। এ সময় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, রেজিস্ট্রার, ডিন, পরিচালক, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দিবসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীপুর ক্যাম্পাসে আজ ভোরে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো পতাকা উত্তোল, কালো ব্যাজ ধারণ এবং দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস ভবনসমূহে বিভিন্ন ব্যানার প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও যোহরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। সারা দেশে বাউবি’র আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রসমূহে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি পালন করা হয়।
এদিকে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে কোরআন খানি ও আলোচনা সভা এবং বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা শেষে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মো: মিজানুর রহমান।
এ উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দলসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
শহিদ বুদ্ধজীবী দিবস উপলক্ষে সামাজিক সংগঠন আমরা একাত্তর, ডিসেম্বর ১৯৭১ উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, ছায়ানট ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ বুদ্ধজীবী পরিবারের সদস্য, ছাত্র, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ ব্যক্তিগত উদ্যোগে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।