বাসস
  ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:০৭
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:৩৪

দেশপ্রেমী ও সৎ হাসান আরিফকে কখনোই ভোলা সম্ভব নয়

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক এটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ

ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক এটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ ছিলেন একজন প্রকৃত দেশপ্রেমী। তাকে কখনোই ভোলা সম্ভব নয়।’

আজ শনিবার বেলা ১১টায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এ এফ হাসান আরিফের দ্বিতীয় জানাজায় অংশ গ্রহণ শেষে তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী, স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন। এ সময়ে  সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এক শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়।  

সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন গণমাধ্যমকে বলেন, হাসান আরিফকে সবাই শ্রদ্ধা করতো। তিনি একটি বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন পার করেছেন। তার সততা সম্পর্কে কেউ কোনোদিন প্রশ্ন তুলতে পারবেনা।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন অতীতের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ২০০১ সালে বেগম খালেদা জিয়া আমাকে এটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগের জন্য একজন ভালো আইনজীবী খুঁজে নিয়ে আসতে বলেন। আমি তখন হাসান আরিফকে নিয়ে তার কাছে গিয়েছিলাম। পরবর্তীতে তিনি এটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন ও দীর্ঘদিন দ্বায়িত্ব পালন করেন। তিনি এই অঙ্গনে একজন ভালো আইনজীবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার অকাল মৃত্যুতে দেশের ও আইন অঙ্গনের যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হবার নয়।  

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, এমন খুব কম মানুষই আছেন, যিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার- এই দুই সময়ে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। হাসান আরিফ অত্যন্ত বিদগ্ধ, সৎ ও বড় মাপের মানুষ ছিলেন। বাংলাদেশের এটর্নি জেনারেল হিসেবে তিনি আইন ও বিচারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তিনি ভূমিকা রেখেছেন। 

ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও দীর্ঘদিনের সহকর্মীকে হারিয়ে ভারাক্রান্ত প্রবীণ আইনজীবী ও সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, একজন অভিজ্ঞ আইনজীবী ও ভালো বন্ধুকে আমরা হারিয়েছি। তাকে হারানোর ফলে সুপ্রিম কোর্ট বারে একটি শূন্যতা সৃষ্টি হলো। দেশের প্রতি দরদ নিয়ে কাজ করা আইনজীবীদের মধ্যে তিনি অন্যতম ছিলেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে তাঁর অনেক স্বপ্ন ছিলো। হাসান আরিফ দেশের জন্য ভাবতেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করতেন। এমন দেশ-পাগল কিন্তু প্রচারবিমুখ মানুষ আমাদের মধ্যে অনেক কমই আছেন। তার মৃত্যুতে সুপ্রিম কোর্ট ও গোটা বাংলাদেশ একজন অভিভাবককে হারালো। 

তাজুল ইসলাম বলেন, তার অনুজ, অগ্রজ ও সহকর্মীদের কাছে হাসান আরিফ ছিলেন কর্মঠ, নীতিবান আইনজীবী এবং শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মানুষ। 

বিদায় বেলায় বিষাদগ্রস্থ চিত্তে তাকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানিয়ে তার বর্ণিল কর্মজীবনকে নিজেদের মনের ভেতরে চিরস্মরণীয় করে রাখার প্রয়াস ব্যক্ত করেন জানাজায় উপস্থিত হওয়া বিশিষ্টজনেরা।