শিরোনাম
ঢাকা, ২ জানুয়ারী, ২০২৫ (বাসস) : সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ ভবিষ্যতে কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের জন্য সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২৫ উপলক্ষে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তরের উদ্যোগে জাতীয় সংসদ সংলগ্ন মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অস্থায়ী মঞ্চে অনুষ্ঠিত এক মুক্ত আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সকল কাজ সকলের কল্যাণ আনয়নের জন্য পরিচালিত হলে এবং দেশে সুশাসন সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হলে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ে উঠতে পারে।’
অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. মহিউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান স্বাগত বক্তব্য দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজিমুদ্দিন খান এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা যৌথভাবে সভা সঞ্চালনা করেন। আজকের আলোচনা সভা ছিল জাতীয় সমাজসেবা দিবস উদযাপন কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্ব।
এর আগে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মানিক মিয়া এভিনিউতে ওয়াকাথন ও সমাজসেবা সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সারাদেশে জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২৫ পালিত হচ্ছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘নেই পাশে কেউ যার, সমাজ সেবা আছে তার।’
মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, নির্বাচিত সরকার পাঁচ বছরের জন্য গঠিত হওয়ায় সব সরকারই ‘অন্তর্বর্তীকালীন’ সরকার।
তিনি বলেন, প্রতিটি সরকারের মনে রাখা উচিত যে, প্রতি পাঁচ বছর পর তার মেয়াদ শেষ হয়। সাম্প্রতিক অতীতে, বিশেষ করে ৫ আগস্টের আগে দেখা গেছে যে, সরকার বিষয়টি উপেক্ষা করেছে এবং যতদিন সম্ভব ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, আগের সরকার একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন না করে অনেক অবৈধ পন্থায় ক্ষমতায় থেকে নানা অপকর্ম করেছে। কিন্তু কেউই চিরকাল অন্যায় করে ক্ষমতায় থাকতে পারে না এবং এর নিখুঁত উদাহরণ হল ২০২৪ সাল।
তিনি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গড়তে সকলকে দুঃশাসন ও অন্যায়ের চর্চা থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানান।
কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে জুলাই-আগস্টের বিদ্রোহে যুবকরা তাদের মূল্যবান জীবন উৎসর্গ করায় দেশে মেধাতন্ত্র নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন অবশ্যই যোগ্যতার ভিত্তিতে হতে হবে।
উপদেষ্টা রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সমস্ত কাজের মান নিয়ন্ত্রণ, মূল্যায়ন এবং পর্যবেক্ষণের মতো বেশ কয়েকটি বিষয় শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।
তিনি বলেন, দেশের ৭২ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর কাজের সমন্বয়ের লক্ষ্যে সমাজকল্যাণ সংস্থার যথাযথ তত্ত্বাবধানের জন্য একটি পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকার সেবার মান উন্নয়ন ও পর্যবেক্ষণে আরও পদক্ষেপ নেবে।
তিনি বলেন, ‘সরকারের একার পক্ষে কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করা সম্ভব নয়। এজন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।’
সমাজে ‘প্রতিবন্ধী’ ব্যক্তিদের কথা বলতে গিয়ে তাদের ‘প্রতিবন্ধী’ না বলে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মেধাবী ব্যক্তি হিসেবে সম্বোধন করতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সকলের উচিত সমাজে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মেধাবী ব্যক্তিদের যোগ্যতা তুলে ধরা।