শিরোনাম
ঢাকা, ৩ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) এর সাথে বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাম্পাসের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের প্রতিনিধিদের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে ভিসি অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়েমা হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম এবং প্রক্টর সাইফুদ্দিন ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, অধ্যাপক মারুফুল ইসলাম, অধ্যাপক কামাল আহমেদ চৌধুরী, তাসনীম সিরাজ মাহবুব, ড. রুশাদ ফরিদী, ড. মোশাহিদা সুলতানা, ড. কাজলী সেহরীন ইসলাম, দীপ্তি দত্ত, মারজিয়া রহমান এবং ড. সামিনা লুৎফা।
শিক্ষক নেটওয়ার্কের বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের সদস্যরা বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সাথে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাদের কিছু আশঙ্কার কথা অবহিত করেন এবং সমস্যা উত্তরণের পরামর্শ দেন।
শিক্ষক নেটওয়ার্কের দাবির মধ্যে রয়েছে, যান ও মানব চলাচলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্মুক্ত করে দেয়া, ডাকসু ও শিক্ষক সমিতি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা, সিন্ডিকেট, সিনেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের বিষয়সহ অন্যান্য যেকোনো সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে অংশীজনের সাথে আলোচনা ব্যতিরেকে কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া।
শিক্ষক নেতারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত মানুষের আগমন, যানজট ও শব্দদূষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষার পরিবেশের ব্যাঘাত ঘটলেও আমরা মনে করি, কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার সীমিত করায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। যা মানুষের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দিয়েছে।
বিবৃতি বলা হয়, আমাদের মনে রাখা দরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের এক ঐতিহাসিক জনপরিসর। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনেক স্থাপনা থাকার কারণে জাতীয় অনেক উদযাপনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক। ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানসহ প্রায় সব জাতীয় ও রাজনৈতিক আন্দোলন এখানেই শুরু হয়েছে।
শিক্ষক নেটওয়ার্ক নেতারা বলেন, রাতের আঁধারে মেট্রোরেলের পিলারে আঁকা জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিজড়িত গ্রাফিতি মুছে ফেলার ঘটনা নিন্দনীয়। এ ধরণের ঘটনা যেন আর না ঘটে সে বিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক থাকার আহবান জানানো হয়। প্রশাসন এর দায় স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল সকল শিক্ষার্থী সংগঠনের সাথে পরামর্শ ও মতবিনিময়ের উপর জোর দেওয়া হয়। যেন ৩১ ডিসেম্বর চারুকলার শিক্ষার্থীদের সাথে সৃষ্ট ঘটনার মতো আর কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা পরবর্তীতে ক্যাম্পাসে না ঘটে। ভবিষ্যতে এ ধরনের যেকোনো ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে প্রক্টর অফিসকে আরও দায়িত্ববান ভূমিকা রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের জন্য ডাকসু নির্বাচন বিষয়ে নেটওয়ার্কের অতীত অভিজ্ঞতা ঢাবি প্রশাসনকে অবহিত করা হয় এবং চ্যালেঞ্জগুলো আলোচিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের তারিখ ঘোষণাসহ আরও যেসব নির্বাচনের দরকার হবে তা করার দাবি জানানো হয়।