বাসস
  ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:০৭
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৪

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত 

ঢাকা, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্টের দেয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপিল শুনানি আজ দ্বিতীয় দিনের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল এই শুনানি শুরু হয়। আগামীকালও শুনানির দিন ধার্য থাকবে।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও গাজী কামরুল ইসলাম সজল।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও অনির আর হক। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মো. আসিফ হাসান।

এর আগে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা লিভ টু আপিল, গত ১১ নভেম্বর মঞ্জুর করে ১০ বছরের কারাদণ্ড স্থগিতের আদেশ দেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ বেঞ্চ। লিভ টু আপিল শুনানিতে দুদকের আইনজীবী মো. আসিফ হাসান আদালতকে বলেন যে, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা কিন্তু আত্মসাৎ হয়নি। জাস্ট ফান্ডটা মুভ হয়েছে। তবে সুদে আসলে অ্যাকাউন্টেই টাকাটা জমা আছে। কোন টাকা ব্যয় হয়নি’।

সে সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এই মামলায় খালেদা জিয়ার দেয়া ৩৪২ ধারায় বক্তব্য তুলে ধরে সর্বোচ্চ আদালতকে বলেন, ’কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই রাজবন্দীর জবানবন্দির প্রতিফলন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যে উঠে এসেছে। আর খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল সংক্রান্ত কোনো অনুদান গ্রহণ বা বিতরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলা হয়েছে।’

অন্যদিকে, বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন লিভ টু আপিল শুনানিতে সর্বোচ্চ আদালতকে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্টের দেয়া রায়ে আইনের ত্রুটি রয়েছে এবং তা ভ্রান্ত ধারণা প্রসূত।’

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। একই বছরের ২৮ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এরপর সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।

এদিকে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেছেন রাষ্ট্রপতি। তবে রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমার পরেও মামলা দুটি আইনগতভাবে লড়ার কথা জানিয়ে বিএনপির আইনজীবীরা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতি তার সাজা মওকুফ করেছেন। তবে সেখানে ক্ষমার কথা আছে। খালেদা জিয়া ক্ষমার প্রতি বিশ্বাসী নন। তিনি অপরাধ করেননি। তিনি ক্ষমাও চাননি। তাই এটা আইনগতভাবে মোকাবিলা করবেন। সে অনুযায়ী আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া।