বাসস
  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:৫৩

দেশে কঠোরভাবে আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে রাষ্ট্র ও সরকারের ভূমিকা দৃশ্যমান করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিএনপির আহ্বান

ঢাকা, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): দেশে কঠোরভাবে আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে রাষ্ট্র ও সরকারের ভূমিকা দৃশ্যমান করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জাদীয়তাবাদী দল-বিএনপি।  

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আজ বৃহষ্পতিবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতি এই আহ্বান জানায় দলটি।

এতে বলা হয়, ‘অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের আহবান, পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে অযথা সময়ক্ষেপণ কিংবা কম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বেশি সময় ব্যয় করা সমীচীন হবেনা।’ 

বিএনপির পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকার উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অক্ষম’ জনগণের মধ্যে এ ধরনের বিশ্বাস জন্ম নিলে একদিকে রাষ্ট্র ও সরকারের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে। অপরদিকে এ ধরনের পরিস্থিতি, উগ্র নৈরাজ্যবাদী গণতন্ত্র বিরোধী দেশি বিদেশী অপশক্তির  পাশাপাশি পরাজিত ফ্যাসিস্টদের পুনরুত্থানের জন্য সহায়ক হবে।

বিবৃতিতে আর বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, হাজারো শহিদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বিতাড়িত, পতিত, পরাজিত পলাতক স্বৈরাচার এবং তার দোসরদের উস্কানিমূলক আচরণ, জুলাই আগষ্টের রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যূত্থান সম্পর্কে অশালীন এবং আপত্তিকর বক্তব্য, মন্তব্য দেশের জনগণের মধ্যে ক্ষোভ এবং ক্রোধের জন্ম দিয়েছে। এরই জেরে বুধবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বৈরাচারের দোসরদের বাসভবন জনগণ ভেঙে দিয়েছে।’

বিএনপি মনে করে বর্তমান অন্তর্র্বর্তী সরকার গত ৬ মাসেও পলাতক স্বৈরাচার এবং তাদের দোসরদেরকে আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে। একটি সরকার বহাল থাকা অবস্থায় জনগণ এভাবে নিজের হাতে আইন তুলে নিলে দেশে-বিদেশে সরকারের অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। সবার মনে রাখা দরকার, দেশের কাঁধে একবার ‘মব জাস্টিসে’র অপবাদ ব্র্যান্ডিং হয়ে গেলে এটি কারো জন্যই সুখকর হবেনা।  

বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই আগস্টের ছাত্র অভ্যুত্থানের শহিদ পরিবারকে রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসন করা, নিন্দিত,ঘৃণিত পলাতক স্বৈরাচার এবং তার দোসরদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা, পরাজিত ফ্যাসিস্টদের উস্কানিমুলক তৎপরতা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, বাজার সিন্ডিকেটে নিয়ন্ত্রন করে জনগণের নিত্যদিনের দুঃখ দুর্দশা লাঘব, গণতন্ত্রকামী জনগণকে যাতে ফ্যাসিবাদী আমলের দায়ের করা মামলায় অকারণে আদালতের বারান্দায় দৌড়াতে না হয় সে ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ, ফ্যাসিস্টদের প্রভাবমুক্ত শাসন প্রশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সর্বোপরি পর্যায়ক্রমে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার দিকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াসহ অগ্রাধিকারভিত্তিতে ইস্যু নির্ধারণ করে সরকার তাদের সুনির্দিষ্ট ও স্বচ্ছ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ জরুরি ছিল। 

সরকারের কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জনগণ অবহিত নয় বলেই জনগণ নিজেরা নিজেদের করণীয় ঠিক করে নিচ্ছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ  করা হয়।
 
এতে আরও বলা হয়, জনগণের আকাঙ্খা উপেক্ষা করে সরকার নিজেরাই নিজেদের খেয়াল খুশিমতো ইস্যু তৈরী করে জনগণের উপর চাপিয়ে দিতে চাইলে জনগণ তখন এভাবে নিজেরাই আইন হাতে তুলে নেয়। বুধবার সারাদেশে এরই প্রতিফলন ঘটেছে। কোনো কিছু নিশ্চিহ্ন কিংবা নির্মূলের মধ্যেই একমাত্র সমাধান নয় বরং ফ্যাসিস্টদের আস্তানাও ভবিষ্যতে ইতিহাসের পাতায় গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হয়ে থাকতে পারে, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের মধ্যে এই ধরনের বার্তা ছড়িয়ে দিতেও ব্যর্থ হয়েছে।