শিরোনাম
ঢাকা, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জনগণ অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এ অদৃশ্য শক্তিকে দৃশ্যমান করা জরুরি।
তিনি বলেন, ‘একজন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ষড়যন্ত্র করে এক কাপড়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এখন যারা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন তারাও আগামী দিনে পালানোর পথ পাবেন না। আমার দেখেছি, রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। এভাবে দেশ চলতে পারে না।’
আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ১২ দলীয় জোটের এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ কথা বলেন।
সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার, অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে প্রণীত ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ র্শীর্ষক এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় নেতাকর্মীদের মধ্যে ৩১ দফা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদি আমিন।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের ঘটনা উল্লেখ গয়েশ্বর রায় বলেন, ৬-৮ আগস্ট যদি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুর করে পুকুর তৈরি করে মাছ চাষ করত কেউ কিছু বলত না। ৬ মাস পরে আমাদের এই চেতনা বোধ এলো কেন? আমরা যদি ব্যাক ট্রেডিশন তৈরি করি, তাহলে আগামীদিন আপনার, আমার বাড়ি ভাঙচুর হবে।
ভাঙচুরের নামে বাজে ট্রেডিশন চললে সংস্কার করে কি লাভ?-প্রশ্ন রাখেন তিনি।
অতি দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, সংস্কারের পেছনে অন্তর্বর্তী সরকারের অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা- তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তবে উদ্দেশ্য যাই হোক, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিৎ কালবিলম্ব না করে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে সময়মতো নির্বাচন দেয়া। তবেই জনগণ তাদের স্যালুট জানাবে।
কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে ১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ৩১ দফা আজ বাংলাদেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত সরব এবং বহুল চলমান একটি বিষয়। এটি বস্তুতপক্ষে সমগ্র বাঙালি জাতির মনের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে। এ ব্যাপারে আমাদের কারও কোনো দ্বিমত নেই। আমরা রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে অক্ষরে অক্ষরে প্রতিটি দফা বাস্তবায়ন করব।
জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারী সরকারের জুলুম ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। আমরা চূড়ান্তভাবে প্রতিদিন প্রতিক্ষণ রাজপথে ছিলাম। জুলাই-আগস্টের যে অভ্যুত্থান সেটা ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ফসল।
তিনি বলেন, আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কথা শুনে, ধৈর্য ধরে আগামীর বাংলাদেশ বির্নিমাণে কাজ শুরু করে দিয়েছি। তবে বর্তমানে এক অশনি সংকেতে দেখে আমরা আতঙ্কিত। কয়েকজনের উসকানিতে সমগ্র জাতি আজ অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। উপদেষ্টারা বিপ্লবের চেতনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সিনিয়র সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ১২ দলীয় জোটের সহস্রাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।