শিরোনাম
ঢাকা, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫(বাসস): পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়তে সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও সংগঠন সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, পরিবেশকে কীভাবে সংস্কার করা যায় তা নিয়ে কাজ করছে সরকার। শহরের বিভিন্ন এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। এক্ষেত্রে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। এজন্য স্থানীয় সরকার, নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি খাতকে আরো সক্রিয় হতে হবে।
আজ রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এর উদ্যোগে ‘উপযুক্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশের অধিকার কেন্দ্রিক সংস্কার’ শীর্ষক এক নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
মানুষের দূর্ভোগ কমাতে বায়ুদূষণ ও ধুলাদূষণ নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাস্তার ধুলা কমাতে এর পাশে ডিভাইডার ও স্লোপে গাছ বা সবুজ ঘাস এর আচ্ছাদন না থাকার বায়ু দূষণ হচ্ছে। এসব স্থানে বায়ু দূষণ রোধকল্পে বৃক্ষরোপণ করা হবে। দূষণের ক্ষেত্রে পুরোনো বাসের কালো ধোঁয়াও ভূমিকা রাখছে। দূষণ হ্রাসে ঢাকা শহরে থাকা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পুরানো বাস রয়েছে। শিগগিরই এসব বাস বাতিল করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, এদিকে বুড়িগঙ্গা নদীতে দূষণের কারণে এর সংস্কার করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বুড়িগঙ্গার দূষণ কমাতে অর্থায়ন পেলেই কাজ শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা ও সঞ্চালনা করেন ব্লাস্টের উপদেষ্টা মিইল ও সোশ্যাল জাস্টিস এন্ড ইনক্লুশান ক্লাস্টার আহমাদ ইব্রাহিম। প্রধান অতিথি ছিলেন, পরিবেশ,বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন বক্তৃতা করেন।
নাগরিক সংলাপে প্যানেল আলোচনা করেন ব্রাক ইউনিভার্সিটি অব গভর্নেস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি)- সিনিয়র একাডেমিক কোঅর্ডিনেটর মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। ব্রীজ একাডেমির চেয়ারম্যান আইয়ুব করম আলী, বেলা’র সিনিয়র আইনজীবী এস হাসানুল বান্না। মিউনিসিপ্যাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর আহবায়ক (অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি) মো. মারুফুল ইসলাম, প্রাকটিক্যাল অ্যাকশন ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টার ইশরাত শবনম।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতিদিন আনুমানিক ২৫ হাজার টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়। যার প্রায় ৫৫ শতাংশ সঠিকভাবে ব্যবহার হয় না। ফলে উন্মুক্ত ল্যান্ডফিল থেকে নির্গত মিথেন গ্যাস বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। যা জলবায়ুর ন্যায্যতা ও স্বাস্থকর পরিবেশের অধিকারকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে। অন্যদিকে অনিয়ন্ত্রিত প্ল্যাস্টিক ও ই-ওয়েস্ট মাটি ও পানি দূষিত করছে।
নাগরিক সংলাপে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ পরিস্কার রাখার দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়, দেশকে ভালোবেসে নিজ উদ্যোগে কাজ করার দায়িত্ব সবার। টেকসই ও বাসযোগ্য পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়তে হলে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদসহ সরকারের নানা উদ্যোগের পাশাপাশি জনসাধারণকে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এছাড়া জনস্বার্থে উপযুক্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সমন্বিত উদ্যোগে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
মাহবুবুর রহমান বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে পারেন না। তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ডিসকাউন্টসহ হেলথ কার্ডের ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি মৃত কর্মীর পরিবারকে এককালীন সহায়তা প্রদানের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।
ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে যারা কাজ করছে তাদের ও বেতন ভাতাদি, চিকিৎসা, বাসস্থান ও স্বাস্থ্য উপকরণের দিকে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। দেশের সব নাগরিককে দেশের উন্নয়নে এমন উদ্যোগে এগিয়ে আসতে হবে।