শিরোনাম
ঢাকা, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : অপচয় ও দুর্নীতির সংস্কৃতি থেকে আমাদের বের হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আইইবি সদর দফতরে সমন্বিত পরিবহন কাঠামো উন্নয়নবিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তেব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, প্রফেসর ড. শামসুল হক সাহেব চারটি সুপারিশ করেছেন। আমি উনার চারটি সুপারিশের সাথে একমত। কিন্তু এই সুপারিশের কোনটিই বাস্তবায়ন হবে না। না হওয়ার কারণ রয়েছে। আমার সঙ্গে বর্তমানে আট জন সচিব কাজ করেন। যদি বিভাগগুলো এক হয়ে যায় তাহলে সচিব তো একজন হবে। আমার সাথে চিফ ইঞ্জিনিয়ার বা সমর্যাদার কাজ করে গোটা পঞ্চাশেক। তাহলে এত চিফ ইঞ্জিনিয়ারের কি হবে। সুতরাং এটা কেউ রাজি হবে না। সবাই মন্ত্রী হতে চায়, সচিব হতে চায়, চিফ ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। এই প্রত্যাশাই আমাদের হতে দিবে না। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠান হলে দুর্নীতির সুযোগ বাড়ে, অপচয়ের সুযোগ বাড়ে। আমাদের অপচয় ও দুর্নীতির সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, একটি রাস্তা করার পর সেটি ঠিক না করে পাশে আরেকটি রাস্তা করা হয়। কারণ, আবার জমি দখল হবে। আবার অপচয় হবে। সচিবদের দোষ দেয়া সহজ। কিন্তু এই প্রকল্পগুলোর ডিজাইন তো ইঞ্জিনিয়াররাই করেন। প্রতিদিন জমি অধিগ্রহনের জন্য আমি ফাইল সাইন করি। বাংলাদেশের সব জমি আমরা কিনে ফেলতেছি। এভাবে জমি কিনলে তো চলার জায়গা থাকবে না। এই জমিগুলোতে মানুষ চাষাবাদ করে। এভাবে জমি ব্যবহার করলে মানুষ জীবন জীবিকা কীভাবে করবে। কিন্তু এগুলো ঠিক নয়। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের এগুলো ভেঙ্গে আবার নতুন করে গড়তে হবে। অথবা শহরের বাইরে গিয়ে নতুন নগরী গড়ে তুলতে হবে।
বিভিন্ন প্রকল্পের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, সরকার বহু জমি দখল করেছে। টাঙ্গালের পাশে একটি সার্ভিস এরিয়া করা হয়েছে। যমুনা ব্রিজের পাশে একটি সার্ভিস এরিয়া করা হয়েছে। আমি ইঞ্জিনিয়ার সাহেবদের জিজ্ঞেস করলাম এগুলো কেন করেন আপনারা। এই অপচয় আপনারা কেন করেন। তারা বললো লোকজন কনস্ট্রাকশনের সময় এখানে থাকে। কর্ণফুলি টানেল যখন হয়েছে সেখানে কেউ কোনদিন থাকেওনি। সেখানে ৪০০ কোটি টাকা দিয়ে একটি সেভেন স্টার মানের ফ্যাসিলিটি তৈরি করা হয়েছে। পদ্মাতে কতগুলো বাংলো করা হয়েছে। আমরা কি জানিনা কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়াররা কোথায় থাকে। ওইখানে সুইমিং পুল, বহুতল ভবনসহ নানা কিছু নির্মাণ করা যেত। এটি বড় একটি অন্যায় কাজ। এখানে লোকজন মাছ ধরতো, ধান চাষ করতো। তাকে তো আমি জীবন জীবিকা থেকে বঞ্চিত করলাম। এ জবাব কে দেবে। আমরা পরষ্পরকে সাহায্য করবো। দেশটা আমাদের সবার। আমি চাই জমি অধিগ্রহনের ফাইল আর যাতে না আসে। আর কত জমি কিনবো। আমাদের দেশে কন্সট্রাকশনের কাজের খরচ সবচেয়ে বেশি। এগুলো নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।
সেমিনারে আইইবি সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম (রিজু) এর সভাপতিত্বে বিশেষ অথিতি ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. বি. এম. বদরুজ্জামান, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ডা. জাহেদ উর রহমান, সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগ অধ্যাপক ড. এম. শামসুল হক।