বাসস
  ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:১১

করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব এফবিসিসিআই’র

ছবি: এফবিসিসিআই

ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে সাধারণ করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৪ লাখ টাকায় উন্নীত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।

দেশের শীর্ষ এই ব্যবসায়ী সংগঠনটি নারীদের জন্য এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাবও দিয়েছে।

এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মুল্যস্ফীতি ও জীবনের ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের কথা বিবেচনা করে সাধারণ মানুষ, প্রবীণ এবং নারীদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি।’

তিনি বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এফবিসিসিআই’র পরামর্শক কমিটির ৪৫ তম সভায় এই কথা বলেন।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন সম্মানিত অতিথি হিসেবে সভায় উপস্থিত ছিলেন। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সভায় সভাপতিত্ব করেন।

এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং আসন্ন বাজেটের জন্য বিভিন্ন প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।

সরকার ও ব্যবসায়ী সমাজের মূল অংশীদারদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই পরামর্শ সভায় আসন্ন জাতীয় বাজেট নিয়ে মতবিনিময় ও প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।

বিভিন্ন খাতের ৪০ জনেরও বেশি ব্যবসায়ী নেতা সভায় তাদের প্রস্তাব তুলে ধরেন।

হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের মানুষদের আয়ের একটি বড় অংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ব্যয় করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় বিদ্যমান কর কাঠামো তাদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিনিয়োগ বাড়াতে এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে সুদের হার স্থিতিশীল রাখা প্রয়োজন। বিনিয়োগ আকর্ষণে সুদের হার কমানো উচিত।’

তিনি বলেন, ‘ব্যাংক ও আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা এবং সুশাসন নিশ্চিত না করা গেলে অর্থনীতির মজবুত ভিত্তি গড়ে তোলা কঠিন হবে। তবে আমরা আশা করি সরকার ইতোমধ্যে এই খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে।’

বাংলাদেশের বিদেশি কূটনৈতিক মিশনগুলোকে দেশের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে আরো কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।

এক্ষেত্রে তিনি বলেন, ‘বাণিজ্যিক কাউন্সিলরদের দায়িত্ব পালনে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। এছাড়া সম্ভাবনাময় দেশে নিয়মিত একক দেশভিত্তিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা উচিত।’

তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘২০২৪ সালের জুলাইয়ের আন্দোলনের চেতনা, বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপট মাথায় রেখে আসন্ন জাতীয় বাজেটটি বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বান্ধবভাবে তৈরি হবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ চাপের পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেট নিয়ে অংশীদারদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। বাজেটের মূল লক্ষ্য হবে ব্যবসা-বাণিজ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে ধারাবাহিক নীতিগত সহায়তা প্রদান।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং অভ্যন্তরীণ চাপের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী বাজেট সম্পর্কে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকে অংশীদারদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। বাজেটের মূল লক্ষ্য হবে ব্যবসা-বাণিজ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে ধারাবাহিক নীতিগত সহায়তা প্রদান।’