বাসস
  ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:০২
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:০৯

জঙ্গীবাদের পৃষ্টপোষকদের যেকোন মূল্যে রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের

নারায়ণগঞ্জ, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জঙ্গীবাদের পৃষ্টপোষকদের হিংস্র থাবা দৃশ্যমান হচ্ছে। তাদেরকে যেকোন মূল্যে রুখতে হবে।
আজ বুধবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের দেশ আবারও সাম্প্রদায়িকতার ছোবলে আক্রান্ত। একটি মহল জঙ্গিবাদের দ্বারা এদেশে বিশৃঙ্খলার সূচনা করেছে। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় হিং¯্র থাবা এদেশে দৃশ্যমান হচ্ছে। এখানে রাজনীতির পাশাপাশি সংস্কৃতির একটি দায়িত্ব আছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এসব জঙ্গিবাদ সংস্কৃতির চিরায়ত শত্রু। এরা আমাদের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। এদের হৃদয়ে বাংলাদেশ নেই। তবে সোনারগাঁ এক সময় প্রাচীন বাংলার রাজধানী ছিল। সোনারগাঁ জাদুঘরকে স্মার্ট জাদুঘর করা দরকার নেই। এর সঙ্গে নানা ইতিহাস ঐতিহ্য জড়িয়ে আছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন হলে তারা শেখ হাসিনার সঙ্গে পারবে না। ভোটে হেরে যাবে। তাদের তো খাই খাই ভাব। সেজন্য তারা মাঠ থেকে বেরিয়ে গেছে। মির্জা ফখরুল এখন হাসপাতালে অসুস্থ, এই অসুস্থতা কী রাজনৈতিক অসুস্থতা নয়? কেন হঠাৎ আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়ে হাসপাতালে। অসুস্থ রাজনীতি করতে করতে ফখরুল সাহেবরা অসুস্থ হয়ে গেছেন। 
তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় আছি, শান্তি চাই। আন্দোলনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান আপনারা আজ পর্যন্ত নেন নাই। আমরা উসকানি দেবো না, আপনারা উসকানি দিচ্ছেন। এই উসকানিমূলক তৎপরতা বন্ধ করুন। তা না হলে দেশের জনগণ আপনাদের প্রতিরোধ করবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিনে শত সেতুর উদ্বোধন করেছেন। নরসিংদীতে একটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ফলক তারা (বিএনপি) ভাঙচুর করে উঠিয়ে ফেলে দিয়েছে। তারা (বিএনপি) নাশকতার উসকানি দিচ্ছে। 
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, এই দেশে কারও সহিংস আন্দোলনের জন্য সাধারণ মানুষের মালামালের নিরাপত্তা বিঘিœত হলে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের দায়িত্ব আছে জনগণের জানমালে রক্ষার্থে সতর্ক অবস্থান নেওয়া। আমরা বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টিতে নেই। আমরা কোনও পাল্টাপাল্টি করছি না। আমরা শান্তির সমাবেশ করেছি। তারা উসকানি দিচ্ছে সংঘাতের, সহিংসতার ও ভাঙচুরের। তারা পুলিশের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তাদের এই হামলা, ভাঙচুর ও সহিংসতার উপযুক্ত জবাব আমাদের দিতে হবে। তারা নিজেরা কিছু করতে পারেনি, এখন শেখ হাসিনা’র উন্নয়ন কাজ দেখে তাদের অন্তর জ্বালা শুরু হয়েছে।
 সোনারগাঁকে সংস্কৃতির আমানত হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের এসব সম্পদকে রক্ষা করতে হবে। পানাম সিটির মনোরম দৃশ্যপট সবাইকে মুগ্ধ করে। সোনারগাঁয়ের এসব বিষয়গুলোর দিকে কর্তৃপক্ষ ঠিকমতো নজর দিলে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন যে লক্ষ্যে এ  লোকশিল্প ফাউন্ডেশন করেছিলেন তা স্বার্থক হবে।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী হাসেম খান, সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব আবুল মনসুর, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক এস এম রেজাউল করিম, জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত মো. শহীদ বাদল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন এ লোকজ ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু নিজ উদ্যোগে এখানে জায়গা বরাদ্দ করে  দেন। এক সময় এ জায়গায় এমন বড় অট্টালিকা ছিলো না, কোনো লাইব্রেরি ছিল না। বর্তমান সরকার লোক শিল্প জাদুঘরের ব্যাপক উন্নয়নের কাজ করেছে। 
মেলায় দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে আয়োজিত মাসব্যাপী এ লোক কারুশিল্প মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনী, লোকজ প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বাইস্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ বাহারী পণ্য সামগ্রীর প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে। মাসব্যাপী উৎসবে প্রতিদিন লোকজ মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কুলের ছেলে মেয়েদের পরিবেশনায় বিলুপ্ত প্রায় গ্রামীণখেলা, পুতুল নাচ, কর্মরত কারুশিল্পীর করুপন্যের প্রদর্শনীসহ নানা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। 
ফাউন্ডেশন সূত্র জানান, এবারের মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনীর ২৪টি স্টলসহ ১০০টি স্টল বরাদ্ধ করা হয়েছে। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতদশা ৪৮ জন কারুশিল্পী সক্রিয়ভাবে অংশ নেবেন। মেলা উপলক্ষে ফাউন্ডেশন চত্ত্বর বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। এই মেলা ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।