শিরোনাম
ঢাকা, ৪ মার্চ, ২০২৩ (বাসস) : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে উন্নয়নের রাজনীতি নিয়ে এসেছেন। উন্নয়নের মাধ্যমে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের চিত্র পাল্টিয়ে দিয়েছেন।
রাজধানীর ইনজিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত আজ এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও এরশাদ সাহেবের সরকার খুনিদের মদদ দিয়েছে। খুনের লাভ দিয়েছে। আর দেশের মানুষকে শোষণ করেছে। তাদের এই রাজনীতি বন্ধ করেছে জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই বাংলাদেশে উন্নয়নের রাজনীতি নিয়ে এসেছেন, উন্নয়নের মাধ্যমে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের চিত্র পাল্টিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, করোনার মহামারির সময় জাতিসংঘ এক রিপোর্টে বলেছিল, তাদের মডেল মত না চললে, বাংলাদেশের ২০ লাখ লোক করোনা মহামারিতে মারা যাবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার মডেল মত চলে বাংলাদেশে ২০ লাখ লোক করোনা মহামারিতে মারা যায়নি।
আনিসুল হক বলেন, শেখ হাসিনা যা কিছু করেছেন তা বাংলাদেশের ইতিহাসে কেউ করেনি। তিনি দেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বানিয়েছেন, উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে গেছেন। মেট্রোরেল, পদ্মাসেতু, কর্ণফুলী টানেল, ফোর লেন ও এইট লেনের রাস্তা করেছেন। তিনি বা তাঁর দল ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ ২০৪১ উন্নত দেশে পরিণত হবে। এই আস্থা আমাদের রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তৃতায় মো. নূর আলম ভূঁইয়া দলিল লেখকদের প্রশিক্ষণের জন্য একটি ইনস্টিটিউট/একাডেমি প্রতিষ্ঠা, সারা দেশে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু হলে দলিল লেখকদের চাকুরির নিশ্চয়তা, জেলা রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে দলিল লেখকদের পরিচয়পত্র/আইডি কার্ড প্রদানের ব্যবস্থা করা, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখকদের ও ক্রেতা/বিক্রেতাদের বসার সুব্যবস্থা করা, কোন দলিল লেখক যুক্তিসঙ্গত কারণে নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে ব্যাংকে নবায়ন ফি জমা দিতে ব্যর্থ হইলে বিলম্বের জন্য অতিরিক্ত ফি আদায়ের মাধ্যমে লাইসেন্স নবায়নের সুযোগসহ ১২ দফা দাবি পেশ করেন।
সমিতির সভাপতি মো. নূর আলম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নারায়নগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম বাবু, সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবসহ সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।
এর আগে আজ শনিবার সকালে ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী জজ বিচারকদের জন্য আয়োজিত ১৩ম ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইনমন্ত্রী বলেন, আদর্শ সমাজ ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব অপরিসীম।
আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বিচারকগণ প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে থাকেন। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিকাশ এবং গণতন্ত্র সুসংহতকরণেও বিচারকদের রয়েছে পরোক্ষ অবদান।
সেকারণেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর দেয়া সংবিধানে বিচার বিভাগকে বিশেষ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। শুধু তাই নয় বিজ্ঞ বিচারকদেরকে বিচারকর্মে স্বাধীন থাকার সাংবিধানিক অধিকার প্রদান করেছেন তিনি। এর মূল উদ্দেশ্য দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। একটি আধুনিক ও জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠন করা।
আনিসুল হক বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার আজকের সাফল্যের পেছনে সময়োপযোগী ও মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্রশিক্ষণের গুরুত্ব উপলব্ধি করেই আমরা বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি করেছি। ফলে করোনার অতিমারির মধ্যেও এখানে বিচারক, সরকারি আইন কর্মকর্তা ও আইনজীবীদের ভার্চুয়ালি প্রশিক্ষণ প্রদান করা সম্ভব হয়েছে। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, ভারত, চীন এবং জাপানেও প্রায় এক হাজার বিচারককে উন্নতমানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। অধিকন্তু দেশেই বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য পদ্মা সেতুর সন্নিকটে মাদারীপুরের শিবচরে একটি অত্যাধুনিক ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমি প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
বিচারকদেরকে প্রশিক্ষণ শেষ করে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে গিয়ে প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান, মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সব শ্রেণি-পেশার বিচারপ্রার্থীকে শুরু থেকেই স্বল্প সময়ে ও সুলভে মানসম্পন্ন ন্যায়বিচার প্রদান করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, তাহলেই সরকারের এতসব আয়োজন সার্থক হবে। সর্বোপরি জনগণের ন্যায়বিচার পাওয়ার সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্ব এই অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সাওয়ার ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমান বক্তৃতা করেন।