শিরোনাম
ঢাকা, ১৩ মার্চ, ২০২৩ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সম্মেলন (এলডিসি৫)-এ অংশগ্রহণের মাধ্যমে তার লক্ষ্য অর্জন করেছে। সেখানে এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রস্তুতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করা হয়েছে।
স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি৫) ৫তম জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে কাতার সফরের পর তিনি আজ গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন ‘এই সম্মেলনে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এসডিজি অর্জন এবং ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য নেওয়া বিভিন্ন প্রস্তুতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করেছি।’
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতার সম্পূর্ণ পাঠটি নিম্নরূপ:
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সহকর্মীবৃন্দ,
উপস্থিত প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
সুধিম-লী।
আসসালামু আলাইকুম! শুভ অপরাহ্ণ।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল সানি এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে স্বল্পোন্নত দেশসমূহ সংক্রান্ত ৫ম জাতিসংঘ সম্মেলন (এলডিসি৫) এর দ্বিতীয় পর্বে যোগ দিতে আমি ৪ থেকে ৮ মার্চ ২০২৩ দোহা সফর করি।
এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘ফ্রম পটেন্সিয়াল টু প্রসপারিটি’। এরআগে ২০০১ সালে আমি ব্রাসেলসে তৃতীয় এলডিসি সম্মেলন এবং ২০১১ সালে ইস্তাম্বুলে চতুর্থ এলডিসি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলাম। জাতিসংঘ এলডিসি সম্মেলনে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এটাই সম্ভবত বাংলাদেশের শেষ অংশগ্রহণ। কারণ, ২০২৬ সালে আমরা এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাব।
এই সম্মেলনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আমি বাংলাদেশের অভাবনীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরি। একইসাথে, আমি ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে মসৃণ ও টেকসই উত্তরণ নিশ্চিত করতে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে আমাদের বিভিন্ন দাবি ও প্রত্যাশার কথা উত্থাপন করেছি।
৫ই মার্চ আমি কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এলডিসি৫ সম্মেলনের ওপেনিং প্লেনারি মিটিং-এ বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করি। এই অনুষ্ঠানে আমি ছাড়াও কাতারের আমির, জাতিসংঘের মহাসচিব, ৭৭তম জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাপতি এবং এলডিসি গ্রুপের বর্তমান চেয়ার মালাউই-এর রাষ্ট্রপতি বক্তব্য রাখেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব তাঁর বক্তব্যে বলেন যে- ‘এলডিসি গ্রাজুয়েশন সুড বি রিউওয়ার্ডেট, নট পানিস্ট’। আমি আমার বক্তব্যে স্পষ্টভাবে বলেছি যে স্বল্পোন্নত দেশগুলো করুণা বা দাক্ষিণ্য চায় না, বরং আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদের ন্যায্য পাওনা চায়। আমি কোভিড অতিমারি ও চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী খাদ্য, জ¦ালানি ও আর্থিক সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য গৃহীত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের দাবি জানাই। এক্ষেত্রে আমি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আর্থিক সহায়তা, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, নিরাপদ অভিবাসন, জলবায়ু অর্থায়ন প্রাপ্তি ইত্যাদি বিষয়ে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের বিশেষ প্রয়োজনের কথা তুলে ধরি। এছাড়া, বাংলাদেশসহ উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর উন্নয়ন অর্জনকে গতিশীল রাখতে বর্ধিত সময়ের জন্য এলডিসিদের জন্য প্রযোজ্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাই।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে জাতিসংঘের সদস্য দেশের স্বীকৃতি পায়। তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করেই আমাদের সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের সকল মাপকাঠি পূরণ করতে সক্ষম হয়।
৫ই মার্চ দুপুরে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা হতে উত্তরণের পথে থাকা তিন এশীয় দেশ - বাংলাদেশ, নেপাল ও লাও পিডিআর- কর্তৃক আয়োজিত ‘ সাসটেইনেবল এন্ড স্মুথ ট্রানজিশন ফর দ্য গ্রাজুয়েটিং অব ২০২১” - শীর্ষক সাইড ইভেন্টের উচ্চ পর্যায়ের অধিবেশনে আমি অংশগ্রহণ করি। এই অধিবেশনে নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠ, লাও পিডিআর-এর উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘ একাপ -এর নির্বাহী সচিব বক্তব্য প্রদান করেন।
আমি বাংলাদেশের উত্তরণযাত্রা ত্বরান্বিত করতে আমাদের সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি উত্তরণমুখী দেশগুলোর পক্ষে পাঁচ-দফা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করি। এ অনুষ্ঠানের শেষে তিন দেশের সমন্বিত দাবি সম্বলিত একটি যৌথ বিবৃতি গৃহীত হয়।
৬ মার্চ সকালে আমি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘দি রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়ালস অব ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিজনেস সামিটে অংশগ্রহণ করি। এই অনুষ্ঠানে কাতারের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
আমি বাংলাদেশ ও কাতারের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে পারস্পরিক লাভজনক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানাই। এ প্রসঙ্গে আমি দু’দেশের সরকারের মধ্যে একটি যৌথ ব্যবসা ও বিনিয়োগ কমিটি এবং দু’দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের সমন্বয়ে একটি যৌথ বিজনেস ফোরাম গঠনের প্রস্তাব করি। এছাড়া, আমি নবায়ণযোগ্য জ¦ালানি, সামুদ্রিক গ্যাস অনুসন্ধান, জ্বালানি সঞ্চালন ব্যবস্থা, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, পর্যটন, স্টার্ট আপসহ বিভিন্ন খাতে কাতারের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাই।
এ দিন দুপুরে আমি আমাদের প্রতিনিধি দল কর্তৃক আয়োজিত সাইড ইভেন্ট ‘ইনভেস্টমেন্ট ইন রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট ইন এলডিসিস ফর স্মার্ট এন্ড ইনোভেটিভ সোসাইটিস’ - এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। এই ইভেন্টে মিশর, সিঙ্গাপুর, এস্তোনিয়ার মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি, জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ, ওইসিডি, আইটিইউ, ডব্লিউআইপি ও এফএও -এর বিশেষজ্ঞগণ অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তাঁরা আমাদের সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে অর্জিত সফলতার প্রশংসা করেন এবং আমাদের রূপকল্প-২০৪১ অনুযায়ী ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে পাশে থাকার আশ^াস দেন।
আমি ১৯৯৬ সালে আমার সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কৃষি গবেষণা উৎসাহিত করা, ২০০৯ সাল থেকে দেশব্যাপী মজবুত ও নিরাপদ ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলা এবং একইসঙ্গে স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, জৈব প্রযুক্তি ইত্যাদি খাতে গবেষণা ও উদ্ভাবন উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা, বৃত্তি, অনুদান প্রচলনসহ নানাবিধ উদ্যোগের কথা তুলে ধরি।
একই দিন সন্ধ্যায় আমি জিসিসি -ভুক্ত দেশসমূহ, ইরাক, জর্ডান, লেবানন ও তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে আয়োজিত আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে অংশগ্রহণ করি। সম্মেলনে আমি জাতির পিতার অনুসৃত পররাষ্ট্রনীতির ধারাবাহিকতায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের নতুনতর দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষ্যে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দিই। এসব দেশের সঙ্গে রপ্তানি প্রসার, বিনিয়োগ আকর্ষণ, জ¦ালানি নিরাপত্তা, প্রবাসীদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষা, প্রযুক্তি সহযোগিতাসহ অর্থনৈতিক কূটনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য আমাদের রাষ্ট্রদূতদের নির্দেশনা প্রদান করি। একইসঙ্গে প্রয়োজন অনুযায়ী ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে কনস্যুলার সেবার পরিসর বৃদ্ধি করার পরামর্শ দিই।
৭ মার্চ সকালে আমি এলডিসি৫ সম্মেলনের ‘এনহেন্সিং দি পার্টিসিপেশন অব লিস্ট ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রিজ (এলডিসিস) ইন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এন্ড রিজিওনাল ইন্টিগ্রেশন’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে বুরুন্ডির রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালন করি। আমার বক্তব্যে আমি বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি ও লজিস্টিক হাব হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরি।
একই দিন বিকেলে আমি আমাদের প্রতিনিধিদল কর্তৃক আয়োজিত সাইডইভেন্ট ‘গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর স্মুথ এন্ড সাস্টেইনেবল গ্রাজুয়েশন: মার্চিং টুয়ার্ডস স্মার্ট বাংলাদেশ’- এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। এই ইভেন্টে ডেনমার্কের উন্নয়ন সহযোগিতা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী ছাড়াও ইউএনসিটিএডি, ডব্লিউটিও, ইউএনআইডিও, ওইসিডি -সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এবং বেসরকারি প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। আমি বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিল্পায়ন, যোগাযোগ অবকাঠামো, ডিজিটাল প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে আমাদের সরকারের নেওয়া বিভিন্ন সুদূরপ্রসারী কর্মকা-ের কথা উল্লেখ করি। আমাদের উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য প্রযোজ্য শুল্ক ও কোটামুক্ত বাণিজ্য সুবিধা এবং ওষুধ শিল্পসহ অন্যান্য খাতের স্বার্থে টিআরআইপিএস অব্যাহতি বজায় রাখার আহ্বান জানাই।
ঐদিন সন্ধ্যায় আমি ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে কাতার প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকবৃন্দ কর্তৃক দোহাস্থ এমএইচএম স্কুলে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি। দেশের চলমান আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাতার প্রবাসীদের অবদান রাখার জন্য আমি আহ্বান জানাই।
অভিবাসনে ইচ্ছুকদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তা নিয়ে বৈধপথে বিদেশ গমন, হুন্ডির পরিবর্তে ব্যাংক বা মানি ট্রান্সফার এজেন্সির মাধ্যমে দেশে রেমিটেন্স প্রেরণ এবং অপরাধমূলক কর্মকা- থেকে দূরে থেকে স্বাগতিক দেশের আইনকানুন মেনে চলার অনুরোধ জানাই।
জাতিসংঘ এলডিসি৫ সম্মেলনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি আমি কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করি। ৫ই মার্চ কাতারের মহামান্য আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল সানির সঙ্গে আমার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ¦ালানির চাহিদা মেটাতে কাতার বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে বৈঠককালে কাতারের মহামান্য আমির আমাকে আশ্বাস প্রদান দেন।
৬ মার্চ কাতার ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন আমিরের মাতা শেখা মোজা বিনতে নাসেরের সঙ্গে আমার বৈঠক হয়। বৈঠকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন খাতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়। শেখা মোজা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এডকেশন এবোভ অল ফাউন্ডেশন-এর আওতায় বাংলাদেশে প্রাথমিক স্তরে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের সহায়তার লক্ষ্যে কাতার ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট-এর সঙ্গে ১২.৭ মিলিয়ন ডলার অনুদান সম্পর্কিত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী সরকারের পক্ষে এই সমঝোতা স্মারকটি স্মাক্ষর করেন।
৪ মার্চ বিকেলে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে আমার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আমি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে তাঁর চলমান আলোচনা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাই। আমি মায়ানমারে দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এবং কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে আরও রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের বিষয়ে জাতিসংঘের সহযোগিতা চাই।
একই দিনে জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ পরিষদের সভাপতি সাবা করোসির সঙ্গে আমার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। এছাড়া, ইউএনসিটিএডি-এর মহাসচিব রেবেকা গ্রিনস্প্যান, আইটিইউ -এর মহাসচিব, এইএনডিপি-র এডমিনিস্ট্রেটর ডেনমার্কের উন্নয়ন সহযোগিতা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইন্টারন্যাশনাল পার্টনারশিপ বিষয়ক কমিশনার আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।
এছাড়াও, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা আমার একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে।
আমার সফরসঙ্গী হিসেবে অন্যানের মধ্যে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী কাতার সফর করেন। তাঁরা বিভিন্ন ইভেন্টে যোগদানের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
৮ মার্চ সকালে আমি ঢাকার উদ্দেশ্যে দোহা ত্যাগ করি। আমাদের যাত্রাপথে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স-এর সৌজন্যে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে একটি সংক্ষিপ্ত স্মারক আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
সামগ্রিকভাবে, জাতিসংঘ সম্মেলনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ তার লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছে বলে আমি মনে করি। এ সম্মেলনে আমরা রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের পথে এলডিসি থেকে উত্তরণ ও এসডিজি অর্জনের লক্ষ্যে আমাদের গৃহীত বিভিন্ন প্রস্তুতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করেছি। স্বল্পোন্নতদেশগুলোর পক্ষ থেকেও আমরা দোহা প্রোগ্রাম অব একশন-এ আমাদের জন্য প্রযোজ্য বিষয়গুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে অঙ্গীকার করেছি। আমরা আশা করবো, এই প্রোগ্রাম অব একশন -এ জাতিসংঘের আওতায় সাসটেইনেবল গ্রাজুয়েশন সাপোর্ট ফ্যাসালিটি স্থাপনের ব্যাপারে যে উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে তা যথাযথভাবে এগিয়ে যাবে।
সবাইকে আবারও ধন্যবাদ।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।