শিরোনাম
এথেন্স, ২২ জুলাই, ২০২৩ (বাসস ডেস্ক) : গ্রিস সপ্তাহান্তে শনিবার ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণতম জুলাইয়ের মুখোমুখি হয়েছে। দেশটিতে তাপমাত্রা ৪০ সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট) এর উপরে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে প্রসারিত আসন্ন তাবদাহ রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উত্তর গোলার্ধের কয়েক মিলিয়ন মানুষ এই গ্রীষ্মে তীব্র গরমে ভুগছে। বিশ্ব রেকর্ডে এই গোলার্ধ উষ্ণতম জুলাইয়ের দিকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
তাপমাত্রার রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ায় বিশেষজ্ঞরা এই পরিস্থিতির জন্য জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানোকে দায়ী করে জলবায়ু পরিবর্তনের দিকে আঙুল তুলেছেন। তারা বলেছেন, জীবাশ্ম জ্বালানী পোড়ানোর কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা ধ্বংসাত্মক আবহাওয়ার মূল ভূমিকা পালন করছে।
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে প্রায় ৮০ মিলিয়ন আমেরিকান এই সপ্তাহান্তে ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রার মুখোমুখি হয়েছে এবং এই সপ্তাহের শেষ দিকে তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পাবে।
ফিনিক্স ও অ্যারিজোনায় তাপমাত্রা ৪৬ ডিগ্রিতে পৌঁছাবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। গত তিন সপ্তাহ যাবত এখানে তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার শহরে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে একটি প্রোপেন (বোতলজাত হাইড্রোকার্বন গ্যাস) ব্যবসা কেন্দ্রে একটি ভয়ঙ্কর অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে গ্যাস ট্যাঙ্কগুলো বাতাসে বিষ্ফোরিত হয়ে নারকীয় পরিস্থিতি তৈরি করে।
ফায়ার ক্যাপ্টেন রব ম্যাকডেড কেপিএইচও টেলিভিশন স্টেশনকে বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, এইরকম গরমের দিনে, এই প্রোপেন ট্যাঙ্কগুলো তাপের প্রসারণে আক্ষরিক অর্থে ক্ষেপণাস্ত্রে পরিণত হয়। এ গুলো ৫০০ গজ (মিটার) উপরে যেতে পারে।’
ভিজিটর সেন্টারের বাইরে তাপমাত্রা প্রদর্শনসহ সেলফি পোস্ট করার জন্য পর্যটকরা ইতোমধ্যে ক্যালিফোর্নিয়া এবং নেভাদার মধ্যে সীমানা ঘেঁষে ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে ভিড় করছেন।
অনেকেই আশঙ্কা করছেন, তাপমাত্রা ৫৬.৭ ডিগ্রির বিশ্ব রেকর্ড ভাঙবে, যা ১৯১৩ সালের জুলাই মাসে সেট করা হয়েছিল। তবে বেশ কিছু আবহাওয়াবিদদের মতে এটি সম্ভবত একটি ত্রুটিপূর্ণ পরিমাপের ফলাফল ছিল।
নাসার জলবায়ুবিদ গ্যাভিন শ্মিট বলেছেন, নির্বিশেষে জুলাই ২০২৩ সবচেয়ে উষ্ণতম মাস হতে চলেছে। শুধুমাত্র রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে নয়, ‘হাজার হাজার বছর না হলেও শত শত বছরের মধ্যে এটি হবে রেকর্ড তাপমাত্রা।’ প্রভাবগুলোকে শুধুমাত্র এল নিনোর আবহাওয়ার ধরণকে দায়ী করা যায় না, যা ‘সত্যিই কেবলমাত্র আবির্ভূত হয়েছে’ এবং বছরের শেষ নাগাদ এটি শক্তিশালী হবে এমন মনে হচ্ছে না।
এল নিনো মধ্য ও পূর্ব গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রশান্তমহাসাগরে সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রার উষ্ণতার সাথে জড়িত।
গ্যাভিন শ্মিট বলেছেন, আশা করছিলাম চরম তাপের প্রবণতা অব্যাহত থাকবে না, ‘বায়ুমন্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাস নি:সরণ অব্যাহত থাকায় এখন আমরা আশঙ্কা করছি এই তাবদাহ অব্যাহত থাকবে।’
গ্রীস কয়েক ডজন দাবানলের সাথে লড়াই করছে। লোকদেরকে বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়ার জন্য সতর্ক করেছে।
ব্যতিক্রমী তাপমাত্রার মানে হল দিনের উষ্ণতম সময়ে অ্যাক্রোপলিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন সাইটগুলো বন্ধ থাকবে।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী ইআরটি-এর আবহাওয়াবিদ প্যানাজিওটিস জিয়ানোপোলোস বলেছেন, ‘এই সপ্তাহান্তে গত ৫০ বছরের মধ্যে জুলাই মাসে সবচেয়ে উষ্ণতা নিবন্ধিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।’