শিরোনাম
ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস): ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা রিউমার স্ক্যানার তদন্তে প্রমাণ পেয়েছে যে, মুসলমান আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যানকে হত্যা করার একটি ভিডিও গত আগস্ট থেকে ভারতে প্রচার করে মিথ্যা দাবি করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশে একজন হিন্দু বৃদ্ধকে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা বলেছে যে, দুটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে দাবি করা হয়েছে যে, একজন হিন্দু বৃদ্ধকে মুসলমানরা পিটিয়ে হত্যা করেছে এবং তারপর একটি মূর্তি থেকে ঝুলিয়ে দিয়েছে।
রিউমার স্ক্যানার টিমের তদন্তে আরো জানা গেছে, ভিডিওগুলোতে যে ব্যক্তিকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে এবং একটি মূর্তি থেকে ঝুলতে দেখা গেছে তিনি হিন্দু বৃদ্ধ নন।
প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, গত আগস্ট মাসে ঝিনাইদহের পোড়াহাটি ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরন নামে এক মুসলিম ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করার পরে জেলার পায়রা চত্বরে প্রতিমার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখার দৃশ্য এগুলো।
তদন্তকালে দেখা গেছে যে, রুকন শেহাবি রুকন ও আরজে মুন (আর্কাইভস- ০১, ০২) নামে দুটি অ্যাকাউন্ট থেকে গত ৫ আগস্ট দুটি ভিডিও (১, ২) পোস্ট করা হয়। উল্লিখিত ভিডিও এবং আলোচিত ভিডিওগুলোর মধ্যে মিল দেখা গেছে।
দুটি পোস্টেই দাবি করা হয়েছে, ভিডিওতে থাকা লাশটি ঝিনাইদহের হিরন নামে এক চেয়ারম্যানের।
নাম ও অবস্থানের ভিত্তিতে প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড দিয়ে অনুসন্ধান করে গত ৫ আগস্ট ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘বিতর্কিত হিরন চেয়ারম্যান গুলি চালিয়েও বাঁচতে পারেননি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট বিকেলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলার ৯ নম্বর পোড়াহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরন ও তার গাড়িচালক আক্তার হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা এবং আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। হত্যার পর হিরনের মরদেহ সিটি সেন্টারের পায়রা চত্বরে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
একই দিনে কালবেলা পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৫ আগস্ট বিকেলে বিক্ষোভকারীরা হিরনের বাড়ি ঘেরাও করার পর তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়, এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
পরে উত্তেজিত জনতা ওই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিলে হিরনসহ চারজন আগুনে পুড়ে মারা যান।
বিক্ষুব্ধ জনতা হিরণের মরদেহ ভ্যানে করে শহরের পায়রা চত্বরে নিয়ে যায়।
বিষয়টি সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য, রিউমার স্ক্যানার টিম গুগল ম্যাপ থেকে পায়রা চত্বরের ছবি সংগ্রহ এবং ভিডিওগুলোতে দৃশ্যমান কাঠামোর সাথে তুলনা করেছে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, ভিডিওতে দৃশ্যমান কাঠামোগুলো পায়রা চত্বরের কাঠামোর অনুরূপ।
তাই রাজনৈতিক কারণে মুসলিম চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরণকে হত্যার ভিডিওটি ভারতে প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশে একজন হিন্দু বৃদ্ধকে পিটিয়ে মেরে একটি মূর্তি থেকে তার লাশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।