বাসস
  ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৫

কুমিল্লার অগ্নিকাণ্ডকে সাম্প্রদায়িক হামলা বলে মিথ্যা গুজব ছড়ানো হচ্ছে: রিউমার স্ক্যানার

ঢাকা, ১ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): তথ্য যাচাইকারী সংস্থা রিউমার স্ক্যানার আজ বলেছে, কুমিল্লায় চুলা থেকে ছড়িয়ে পড়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

অনুসন্ধান চালানোর পর তথ্য যাচাই সংস্থাটি জানায়, কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া বাজারের সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি কোনো সাম্প্রদায়িক হামলা নয়।

ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিকভাবে জানায়, এ অগ্নিকাণ্ডের উৎপত্তি চুলা থেকে।

এছাড়াও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ৭২টি দোকানের মধ্যে মাত্র ছয়টি হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের বলে জানায় রিউমার স্ক্যানার।

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া বাজারে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বলে ইন্টারনেটে মিথ্যা গুজব ছড়ানো হচ্ছে।

গত ৩০ ডিসেম্বর মূলধারার গণমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনের ওয়েবসাইটে ‘যানজট কাল হয়েছে মাধাইয়া বাজারে, আগুনে পুড়েছে শতাধিক দোকান’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ক্ষয়ক্ষতির তীব্রতা বেড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, দুই ঘণ্টার আগুনে প্রায় ৪৩টি দোকান পুড়ে গেছে।

সাধারণত একটি দোকানের ওপর আরেকটি দোকান থাকে। সে অনুযায়ী এ বাজারে শতাধিক দোকান থাকতে পারে। প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ  ৪৩ লাখ টাকা বলে জানা গেছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।

ফায়ার সার্ভিস কুমিল্লার চান্দিনা স্টেশন অফিসার অনয় ঘোষ বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি যে, একটি মিষ্টির দোকানের চুলা থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে দাহ্য পদার্থ। বিশেষ করে যে এলাকায় আগুন লেগেছে, সেখানে অনেক কাঠের প্যালেট ছাড়াও পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী থাকায় আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।’

একই তথ্য প্রকাশ করেছে এনটিভি, যমুনা টিভি ও বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য মাধাইয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির তৈরি ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের তালিকা সংগ্রহ করে রিউমার স্ক্যানার টিম।

মাধাইয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কে এম জামাল ও সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুর রহমান স্বাক্ষরিত তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অগ্নিকাণ্ডে মোট ৭২টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬টি দোকান হিন্দুদের মালিকানাধীন। দোকান ৬টি হলো- ডা. শ্রীনাথের মডার্ন ফার্মেসি, ডা. শান্তিরঞ্জন রায়ের উপন্দে হোমিও হল, ডা. পলাশের আদিত্য ফার্মেসি, চিত্তরঞ্জন সরকারের লন্ড্রির দোকান, নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথের লন্ড্রির দোকান ও চন্দন সরকারের জুতার দোকান।

পরে, মাধাইয়া বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি কে এম জামালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমার স্ক্যানারকে বলেন, মো. সালামের মিষ্টির দোকান সালাম মিষ্টান্ন ভাণ্ডার থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এখানকার কিছু দোকান ছিল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের। তাই কুমিল্লার বাজারে চুলা থেকে আগুনের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হামলা বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

তথ্য যাচাই সংস্থাটির অনুসন্ধানে এই সত্যটি বেরিয়ে এসেছে।