বাসস
  ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:৫৬
আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৩

মুক্তিযুদ্ধে আপনাদের রাজনৈতিক ভূমিকা কী ছিল? জাতি জানতে চায়: রিজভী

ঢাকা, ২ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আপনাদের রাজনৈতিক ভূমিকা কী ছিল? আপনারা কোন সেক্টর কোন কমান্ডারের অধীনে যুদ্ধ করেছেন? জাতি তা জানতে চায়।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট মহানগরীর হুমায়ুন রশীদ চত্বর সংলগ্ন স্থানে ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ পক্ষ থেকে যুব এশিয়া কাপ বিজয়ী ক্রিকেটার ইকবাল হোসেন ইমনের পরিবারকে শুভেচ্ছা উপহার প্রদানকালে তিনি একথা বলেন।

সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্য ‘দেশে পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক শক্তি দুটি, একটি সেনাবাহিনী আরেকটি জামায়াত’ এর প্রেক্ষিতে এমন প্রশ্ন রাখেন রুহুল কবির রিজভী।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল বলেছে, দেশপ্রেমিক তারা এবং সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী দেশপ্রেমিক নিঃসন্দেহে। কারণ তাদের পূর্বসূরিরা এই বাংলাদেশ নির্মাণে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন, তার অন্যতম মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ’২৪ এর গণঅভ্যুত্থানেও সেনাবাহিনী উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছে।’

তিনি বলেন, আমি ইসলামপন্থি সেই রাজনৈতিক দলকে বলতে চাই, ’৭১ এ আপনাদের রাজনৈতিক ভূমিকা কী ছিল? কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন, কোন সেক্টর কমান্ডারের আন্ডারে যুদ্ধ করেছেন? বাংলাদেশে কেউ দেশপ্রেমিক নেই, শুধু একটি রাজনৈতিক দল দেশপ্রেমিক এই ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি করলে মানুষ হাসবে, মানুষ হাসি ছাড়া আর কিছু দেবে না।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা প্রশ্ন রেখে বলেন, স্কুলে পাঠ্যবই সম্পূর্ণ সরবরাহ করা যায়নি, সেটা ভিন্ন ব্যাপার। কিন্তু সেখানে ইতিহাসের বইয়ে তারা কিছু কাজ করেছেন, প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এখানে এই জাতির বিবেকবানদের জন্য যে অধ্যায় করা হয়েছে, তাতে আমরা দ্বিমত করছি না। সেখানে শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে মুক্তিযুদ্ধের অধ্যায় রাখা হলো না কেন?

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, জিয়াউর রহমান তো শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি, তিনি যুদ্ধ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের অধ্যায় থাকবে না কেন? যারা প্রবাসী সরকার হয়েছিল, সেটা থাকবে, তার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের একটা অধ্যায় থাকতে হবে। যতটুকু হয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ জানাই, কিন্তু অসম্পূর্ণ থাকবে কেন?

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ একটি বড় ধরনের ঘটনা, শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধিকারের আন্দোলন করেছেন, সেটি স্বাধীনতার জন্য একটি মাঠ প্রস্তুত হয়েছে, কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধে কোনো বিশেষ ঘোষণা বা প্রস্তুতির কথা বলেননি। সেই আহ্বান তার নেই। প্রকৃত সত্য হচ্ছে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন জিয়াউর রহমান এবং যুদ্ধ হয়েছে ৯ মাস। সেই অধ্যায়টি রাখা হয়নি। আমি সরকারকে অনুরোধ করবো, ইতিহাস স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস হওয়া উচিত।

আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।