বাসস
  ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:৫৯

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তিতাস গ্যাসসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দুদকের অভিযান

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তিতাস গ্যাসসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দুদকের অভিযান। ছবি: ফেসবুক

ঢাকা, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তিতাস গ্যাস কোম্পানিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আজ ৪টি অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আখতারুল ইসলাম জানান, তিতাস গ্যাসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঢাকার সাভার এলাকায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের ঢাকা-২ সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে দুদক টিম সাভারের তিতাস গ্যাস অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। সাভারের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন করে ১১০ টির অধিক অবৈধ গ্যাস সংযোগ পাওয়া যায় এবং তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় সে সকল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। 

এ ছাড়া গাজীপুরে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের গাজীপুর জেলা কার্যালয় থেকে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

অভিযানকালে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গাজীপুর সদরের উত্তর বিলাশপুর ও চান্দনা চৌরাস্তায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ পাওয়া যায়। এ সময় প্রায় ৪০টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং অবৈধ সংযোগ ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিতাস কর্তৃপক্ষ জানানো হয়। অভিযানকালে গাজীপুর তিতাস গ্যাস কোম্পানির কর্মকর্তা কর্মচারীদের দায়িত্বে অবহেলাসহ অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে বলে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। 

এদিকে গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ও শিক্ষকরা চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত ক্রয়, ভুয়া বিল-ভাউচার প্রস্তুত, কেনাকাটায় টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয় একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আসবাবপত্র ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত বেঞ্চ ক্রয় ও নিম্নমানের মালামাল ক্রয়ের বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। 

পরিদর্শনকালে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২টি পানি শোধনাগার বন্ধ অবস্থায় রয়েছে, যার মধ্যে একটির যন্ত্রপাতি ও পাইপ নিম্নমানের পাওয়া যায়। অভিযানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগের শর্ত (বয়স ৩২ এর ওপরে) ভঙ্গ করে নিয়োগ দেয়ার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়াও কফি হাউজ ও লেকপাড়ের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শেষ না করেই পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারকে অতিরিক্ত বিল দেওয়া, ৭-৮ বছর আগে কাজ শুরু করেও বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেইট নির্মাণ শেষ না করে আর্থিক অনিয়ম করা, ম্যুরাল নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ সাময়িক বরখাস্তকৃত উপপরিচালক কর্তৃক সিন্ডিকেট করে কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। 

শিক্ষা বোর্ডের অনিয়ম আড়াল করতে অডিট টিম কর্তৃক ঘুঘ লেনদেন ও অন্যান্য অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের দিনাজপুর জেলা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযোগে বর্ণিত ব্যাংক হিসাব বিবরণী পর্যালোচনা করে। প্রাথমিক পর্যালোচনায় ঘুঘ লেনদেনের সত্যতা রয়েছে বলে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। কেনাকাটার বিভিন্ন অনিয়ম সংক্রান্ত বিষয়ে টিম বিভিন্ন রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। এসব অভিযান পরিচালনাকালে সংগৃহীত সকল তথ্যাবলি বিস্তারিতভাবে যাচাই করে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে।