শিরোনাম
ঢাকা, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, রামগড় স্থল বন্দর নির্মাণে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের রাঙামাটি সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে আজ খাগড়াছড়ির রামগড় স্থল বন্দরে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের সময় স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও বন্দর কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের সাথে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভারতের সেভেন সিস্টার্স রাজ্যসমূহের সাথে ভারতের অন্যান্য রাজ্যের দূরত্ব বেশি হওয়ায় মালামাল পরিবহনে সময় ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যায়। এর ফলে, ওই রাজ্যসমূহে দ্রুত ও কম খরচে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মালামাল পরিবহনের জন্য এই স্থল বন্দরটি নির্মাণ করা হয়। তবে, উক্ত স্থল বন্দর নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে চাপা অসন্তোষ রয়েছে, যা জিজ্ঞাসাবাদে টিম জানতে পারে। অধিকন্তু, ওই স্থল বন্দর নির্মাণের মাধ্যমে অত্র এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে কি না, এ বিষয়ে এলাকাবাসী সন্দিহান বলে টিম পর্যবেক্ষণ করে।
প্রকল্প পরিচালক জানান, স্থল বন্দরটির অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ১৯০ কোটি টাকার প্রকল্প চলমান রয়েছে, ইতোমধ্যে যার ৪৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও, তড়িঘড়ি করে বন্দরটি উদ্বোধনের জন্য ১৫ কোটি টাকা খরচ দেখিয়ে একটি সেড নির্মাণ করা হয়েছে, যা বাহ্যিক দৃষ্টিতে নিম্নমানের এবং কম অর্থের ব্যয়ে সম্পাদিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।
একই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং রামগড় স্থল বন্দর প্রকল্প অফিসে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের সময় প্রকল্পের ডিপিপি সংগ্রহ ও পর্যালোচনা করা হয়। প্রাথমিক পর্যালোচনায় প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইকালে সঠিক পরিমাপ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়নি, যার ফলে ফিজিবিলিটি স্টাডি-তে প্রকল্পের আর্থিক ও অর্থনৈতিক সুবিধার সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রতিফলিত হয়নি। এছাড়া, ‘ফাইনান্সিয়াল এনালাইসিস অব রামগড় ল্যান্ড পোর্ট’ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় প্রাক্কলিত এনপিপি ঋণাত্মক ১২৮ কোটি ৮ লাখ টাকা হওয়ার পরও প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। অভিযানের সময় চাওয়া রেকর্ডপত্র প্রাপ্তিসাপেক্ষে পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনাপূর্বক এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এদিকে শরীয়তপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে শরীয়তপুর জেলা পরিষদে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের সময় জেলা পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে টিম। টিম দায়িত্বরতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে যে, শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর ডাকবাংলো নির্মাণে প্রথম ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কাজ না করে পুনরায় ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়াও, অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে টিম বেশ কিছু অসংগতির প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পায়।
এ ছাড়া ভৈরব রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ দুর্নীতি দমন কমিশনের কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয় থেকে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের সময় এনফোর্সমেন্ট টিমের সদস্যরা অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে, টিম নথিপত্রের ভিত্তিতে সরেজমিনে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে।
অভিযানের সময় সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।