বাসস
  ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:০৬
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:২২

স্ত্রী-কন্যাসহ আ.ক.ম. বাহাউদ্দিনের বিরুদ্ধে দুদকের পৃথক মামলা

আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন ও তার মেয়ে তাহসীন বাহার সূচনা। কোলাজ

ঢাকা, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন, তার মেয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহার সূচনা এবং স্ত্রী মেহেরুন্নেছার বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন এক ব্রিফিংয়ে জানান, আজ তাদের বিরুদ্ধে এই তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তিনি জানান, আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে তার জ্ঞাতআয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৬৭ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৬ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অসাধু উপায়ে অর্জনপূর্বক দখলে রেখেছেন।

এছাড়া তিনি ২৯টি ব্যাংক হিসাবে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৫৮ কোটি ৬৮ লাখ ৬৩ হাজার ৯০৫ টাকা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ অবৈধ অর্থ জ্ঞাতসারে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছেন।

এসব অপরাধে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দ্বিতীয় মামলার এজাহারে বলা হয়, আ.ক.ম. বাহাউদ্দিনের মেয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহার সূচনা পাবলিক সার্ভেন্ট থাকাবস্থায় জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৩ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৭০ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অসাধু উপায়ে অর্জনপূর্বক ভোগদখলে রেখেছেন। ১৬টি ব্যাংক হিসাবে তিনি জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ৭৩ হাজার ১৯৩ টাকা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে অপরাধলব্ধ অবৈধ অর্থ জ্ঞাতসারে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছেন। এসব অপরাধে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অপর মামলার এজাহারে বলা হয়, আ.ক.ম. বাহাউদ্দিনের স্ত্রী মেহেরুন্নেছা একজন গৃহিণী হওয়া সত্ত্বেও তার স্বামী সাবেক সংসদ সদস্য আ.ক.ম. বাহাউদ্দিনের অবৈধ সম্পদকে বৈধ করার অপপ্রয়াসে নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে আয়কর নথিতে প্রদর্শিত করে স্বামীর অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ তার নিজ নামে ২ কোটি ৩৭ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগদখলে রেখেছেন এবং আ.ক.ম. বাহাউদ্দিনের অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ তার স্ত্রীর নামে ওই জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনে একে অপরকে সহযোগিতা করার দায়ে মেহেরুন্নেছা এবং আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন'র বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এছাড়া আ.ক.ম. বাহাউদ্দিনের মেয়ে আয়মান বাহারের ১ কোটি ৪৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসের অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন ও আজিজা বাহারের ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার ২২২ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসের অসংগতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের উৎস ও উৎসসমূহের সঠিকতা বা যথার্থতা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নিরূপণের লক্ষ্যে তাদের প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(১) ধারা মোতাবেক পৃথক-পৃথক সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারির সুপারিশ করা হয়েছে।