বাসস
  ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:২৩

দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকারকে সহযোগিতা করছি: আমীর খসরু

আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: বাসস

ঢাকা, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতেই তার দল বিএনপি সরকারকে সহযোগিতা করছে। 

দেশ ও প্রবাসীদের কল্যাণে ভবিষ্যতে নজর দেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারকে এ জন্যই সহযোগিতা করছি, যাতে করে দেশ যত দ্রুত সম্ভব একটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। কারণ, এর কোনো বিকল্প নেই। এর বাইরে অন্য কোনো রাজনৈতিক প্রক্রিয়া করতে গেলে, মানুষের মনে সন্দেহ ও ভিন্ন ধারণা তৈরি হবে। সেটা হবে অগণতান্ত্রিক। আমরা শেখ হাসিনার পতনের আগেই ৩১ দফা এবং ৭ বছর আগে ‘ভিশন-২০৩০’ ঘোষণা করেছি। যা বাস্তবায়নে আমরা জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতারা ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রায়ন ও উন্নয়নে বহির্বিশ্ব বিএনপি’র ভূমিকা’ শীর্ষক এ আলোচনা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। 

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাটের সভাপতিত্বে ও বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস আহমেদের পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল লতিফ জনি, মহিউদ্দিন আহমেদ ঝিন্টু, ফ্লোরিডা বিএনপি’র সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক ইমরানুল হক চাকলাদার, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপি’র সভাপতি অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবু, কাউন্সিলর সুরাইয়া, অস্ট্রেলিয়া স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মুসলেহ উদ্দিন হাওলাদার আরিফ, কানাডা মহিলা দলের নাজমা হক, কানাডা নর্থ বিএনপি’র সভাপতি তৌফিক এজাজ প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

‘জুলাই-আগষ্টের আন্দোলনের সফলতা মানে দেশের ১৮ কোটি মানুষের সফলতা’- এ কথা উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ওই আন্দোলনে যার যার অবস্থান থেকে সকলেরই অবদান আছে। এ ক্ষেত্রে প্রবাসীদেরও সম-অবদান রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলে থাকেন, প্রবাসীরা-তো নিরাপদ জোনে থেকে আন্দোলন করেছে। কিন্তু তাদের পরিবার ও স্বজনরা বাংলাদেশে কীভাবে নিগৃহীত হয়েছেন, তা আমরা জানি। বাংলাদেশের মতো এতো সহজে প্রবাসে আন্দোলন করা যায় না। স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে বা বিশ্ব ব্যাংকের সামনে জমায়েত হওয়া এতো সহজ না। তারপরও বিএনপি’র হাজার হাজার লোক রাজপথে আন্দোলন করেছেন। আমরা তাদের অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই। দেশ ও প্রবাসীদের কল্যাণে যা করা দরকার, সেদিকে আমরা নজর রাখবো, ইনশাআল্লাহ।’

বিএনপি’র এই নেতা বলেন, প্রবাসীরা কিন্তু বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে ও রেমিট্যান্স বন্ধ করে দু’ভাবেই যুদ্ধ করেছে। তারা দেশ ও জাতির প্রতি কমিটমেন্ট রেখেছে। তার ফলাফল কিন্তু জাতি পেয়েছে। তিনি শেখ হাসিনার পতনের পেছনে প্রবাসীদের অবদান নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি করারও পরামর্শ দেন। 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অনেকেই আন্দোলনে অনেক পরে যোগ দিয়েছেন। তারা কিন্তু আমেরিকায় হোয়াইট হাউসের সামনে এবং ব্রাসেলস, জাপান, লন্ডন ও অস্ট্রেলিয়ার আন্দোলন দেখেনি। এই আন্দোলনের পেছনে ড্রাইভ দিয়েছেন তারেক রহমান। বেগম খালেদা জিয়াও ড্রাইভ দিয়েছেন। তিনি নিজে জেল খেটেছেন। 

পুরো আন্দোলন ড্রাইভ করেছে বিএনপি। এটা রেকর্ড থাকা দরকার।

প্রবাসীদের দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আপনাদের দেশপ্রেম ও ভালোবাসা শেষ হলে চলবে না। আন্দোলন কিন্তু শেষ হয়নি। আপানাদেরকে অবশ্যই  মূল্যায়ন করা হবে।’

স্বৈরাচারী সরকার তো দেশের মালিকানা নিজেদের হাতে নিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশ আজ খাদের কিনারে। তাই, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। 

সংস্কারকে একটা চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে অভিহিত করে আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত না থাকায় দেশের এই সংকট। আপনারা বিশেষ কিছু সংস্কার করতে চাইলে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসুন। শুধু ৫/১০ জন বসে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা যায় না। সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই, জনগণের কাছে যেতে হবে।’

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ বলেন, ‘প্রবাসীরা আমাদের চেয়েও দেশপ্রেমিক। আমরা সরকারের কাছে নতুন কিছু দেখতে চাই। কিন্তু সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। লড়াই কিন্তু শেষ হয়নি।’
 
তিনি অতি দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানান।