বাসস
  ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:১৯

কর্ণফুলী আবাসন প্রকল্পে পানি সরবরাহে ঐকমত্যে সিডিএ ও চট্টগ্রাম ওয়াসা

ঢাকা, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ও চট্টগ্রাম ওয়াসা ‘কর্ণফুলী আবাসিক প্রকল্প’র জন্যে পানি সরবরাহের ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম ওয়াসা ও সিডিএ’র ঐকমত্য সিদ্ধান্তের ফলে ৩০ বছর পর ৫১৯ প্লট মালিকের আবাসিক ভবন নির্মাণের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে।

আবাসিক সংকট নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৩০ বছর আগে চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে ‘কর্ণফুলী আবাসিক প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প গড়ে তুলে। আবেদনের মাধ্যমে ৫১৯ জনের কাছে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হলেও পানি উত্তোলন ও সরবরাহের ব্যবস্থা না থাকায় গত তিনদশক ধরে প্লট গ্রহীতারা কোনরকম অবকাঠামো উন্নয়ন কাজে হাত দিতে পারেনি। 
 
সিডিএ চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ নুরুল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিডিএ’র বোর্ড সভায় এ বিষয়ে আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান একজন বোর্ড সদস্য। এ বৈঠকে বোর্ড সদস্য হিসেবে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার পাশা উপস্থিত ছিলেন।

সিডিএ সূত্র জানান, পানির অভাবে পরিত্যক্ত হতে যাওয়া এই আবাসিক এলাকার ৫১৯টি প্লটে পানি সরবরাহের জন্য পাইপলাইন স্থাপনের খরচ দেবে সিডিএ। ওয়াসা পানি সরবরাহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

সিডিএ সূত্র জানান, প্রকল্পে পাইপ লাইন বসাতে প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। আর্থিক টানাপোড়নের কারণে এ টাকার সংস্থান সিডিএ’র পক্ষে যোগান দেয়া কঠিন। তবুও প্রকল্পটি বাস্তবায়নের স্বার্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে এবং ৫১৯ প্লট গ্রহিতা মালিকদের কাছ থেকে কাঠা প্রতি আনুপাতিক হারে উন্নয়ন খরচ আদায়ের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে প্লট মালিক সমিতির সঙ্গে সিডিএ কর্তৃপক্ষ বৈঠক করবে।

সিডিএ’র ‘কর্ণফুলী আবাসিক প্রকল্প’ প্লট মালিক সমিতির সভাপতি এডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান বাসসকে জানান, আল্লাহর অশেষ রহমতে ৩০ বছরের দুঃখ ঘুচতে যাচ্ছে। আমরা বহুদিন ধরে সিডিএ এবং ওয়াসায় ধরণা দিয়ে আসছিলাম। কিন্তু কোন কুল-কিনারা পাইনি। আমরা সিডিএ এবং ওয়াসার সঙ্গে আলোচনা করে যতটুকু পারি সহযোগিতা করব। তবু আশা করবো প্রকল্পে সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হোক।

জানা যায়, ১৯৯৪ সালে সিডিএ কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে মইজ্জ্যারটেক এলাকায় ৫১ দশমিক ৬৭ একর জায়গার উপর কর্ণফুলী আবাসিক এলাকা প্রকল্পটি গড়ে তোলে। কিন্তু প্লট বরাদ্দ দেওয়ার পর দেখা যায়, এলাকায় সুপেয় পানি নেই। নানাভাবে চেষ্টা করেও পানির সংস্থান না হওয়ায় ৩০ বছর ধরে প্রকল্পটি ঝুলে রয়েছে। প্রকল্পে একটি প্লটেও বাড়িঘর তৈরি হয়নি। পানির অভাবে এলাকাটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। ৫১৯টি প্লটের মালিকেরা সমিতি গঠন করে এলাকায় পানির সংস্থান করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করেন।

চট্টগ্রাম ওয়াসা দক্ষিণ চট্টগ্রামে পানি দেওয়ার জন্য ভান্ডালঝুরি প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পর বিষয়টি নিয়ে প্লট মালিকেরা আশাবাদী হন। কিন্তু ভান্ডালজুরি পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে কর্ণফুলী নদীর বাম তীরে শিকলবাহা, চরপাথরঘাটা, রাঙ্গাদিয়া, বড় উঠান, চরলক্ষ্যা, কোরিয়ান ইপিজেড, ২টি সার কারখানা, সিমেন্ট ফ্যাক্টরি, স্টিল মিল এবং ১০ মেগাওয়াট বিশিষ্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন  কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মিল, শিল্প কারখানা ও তার আশেপাশের জনবসতি এলাকায় ওয়াসা পানি সরবরাহের কার্যক্রম চালাচ্ছে। সেই সঙ্গে কর্ণফুলী আবাসিক এলাকায় নতুন করে পাইপলাইন বসিয়ে পানি সরবরাহের বিষয়ে সিডিএ-ওয়াসা ঐকমত্যে পৌঁছেছে।