বাসস
  ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:২০

এক-এগারোর ভয়াবহ পরিণতির শিকার বিএনপির চেয়ে বেশি কেউ হয়নি: মির্জা আব্বাস

আজ বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে আরাফাত রহমান কোকোর দশম মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মির্জা আব্বাস। ছবি: বাসস

ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, এক-এগারোর ভয়াবহ পরিণতির শিকার বিএনপির চেয়ে বেশি কেউ হয়নি। খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে দলের কোন নেতাকর্মী এ থেকে রেহাই পায়নি।

তিনি বলেন, ‘আজকে অনেকে স্বাধীনতা পেয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছেন। কেউ কেউ বলছে বিএনপি আবারও এক-এগারো আনার পাঁয়তারা করছে। এক-এগারোর ভয়াবহ পরিণতি বিএনপির চেয়ে কেউ বেশি শিকার হয়নি। খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে দলের এমন কোনো নেতাকর্মী এ থেকে রেহাই পায়নি। দেশের মানুষ যেন বিভ্রান্ত না হয় সেজন্য সবাইকে গণতন্ত্রের স্বার্থে আরও চিন্তা-ভাবনা করে কথা বললে ভালো হয়।’

আজ শুক্রবার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের নিচতলায় আরাফাত রহমান কোকোর দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাসে শহিদ জিয়া (জিয়াউর রহমান) এবং তাঁর পরিবারের ইতিহাস বিরল। খালেদা জিয়া তার স্বামী হারিয়েছেন, সন্তান হারিয়েছেন। বিনা দোষে ৭ বছর বন্দী ছিলেন। আজকে অনেকে জিয়া পরিবারের অবদানকে অবজ্ঞা করছেন। এই অবজ্ঞা শুধু জিয়া পরিবারকে নয়, দেশ ও গণতন্ত্রের প্রতি অবজ্ঞা।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, খালেদা জিয়াকে স্লো-পয়জনের মাধ্যমে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া মানে গণতন্ত্রকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া।

তিনি বলেন, ‘আরাফাত রহমান কোকোকে চৌকসভাবে হত্যা করা হয়েছে। একদিকে মা অসুস্থ, ভাইকে শারীরিকভাবে নিষ্ঠুরতম অত্যাচার করে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। কোকোকে অসুস্থ অবস্থায় দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। শেষ পর্যন্ত তিনি লাশ হয়ে দেশে ফেরেন।’

তিনি বলেন, ‘এখন কেউ কেউ এমনভাবে কথা বলছেন যেন বিএনপি আওয়ামী লীগের দোসর। বিএনপি ভারতের দোসর। অথচ বিএনপি জন্মলগ্ন থেকে আওয়ামী লীগের স্বেচ্ছাচারিতা, গণতন্ত্র হরণ ও ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আসছে।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগের আমলেই আমার ১১ বছর জেল হয়েছে, আমার স্ত্রীর ১৬ বছর, আমার ছোট ভাইয়ের ৮ বছর সাজা হয়েছে। এমনি করে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নির্যাতন নিপীড়ন হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অনেকে বিদেশে বসে জ্ঞান দিচ্ছেন। এতে দেশের শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে। আপনাদের যে প্রজ্ঞা আছে তা দেশের কাজে লাগান। অনেকে বলেন নতুন দল গঠিত হচ্ছে। বিএনপি তা জেলাসি করছে। যারা এগুলো বলছেন তারা জাতির শত্রু। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল। যেকোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকেই স্বাগত জানায়। তবে জনসমর্থন আদায় করতে হলে জনগণের পালস বুঝতে হবে।’

কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গাছে কাঠাল গোঁফে তেল। একটি দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পাগল। সুযোগ পেলেই টোপ করে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছেন। কিন্তু তাদেরও বুঝা উচিত দলটির বিভিন্ন দুঃসময়ে তারা বিএনপিকেই কাছে পেয়েছিলেন।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য শামসুজ্জামান মেহেদী, মাহবুব আলম, মসিউর রহমান বিপ্লব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব এহসান, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইয়াসিন আলী, সহ-সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, রফিকুল ইসলাম, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ডা. তৌহিল আউয়াল ও মৎসজীবী দলের সাবেক সদস্যসচিব আব্দুর রহিম।