ঢাকা, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তেলাপোকার কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় দুই শিশুর মৃত্যর ঘটনায় করা মামলায় পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানি ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামানসহ চারজনের বিচার শুরু হয়েছে।

গত ১৪ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনাল তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মাসুদ করিম অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

অন্য আসামিরা হলেন- পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিস কোম্পানির এমডি ফরহাদুল আমিন, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মোসলেহ উদ্দিন শামীম ও স্প্রে-ম্যান মো. টিটু মোল্লাকে আসামি করা হয়েছে।

আজ ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. বিল্লাল হোসেন বাসস'কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ মামলায় চার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু আদেশ দিয়েছেন আদালত আগামী ২ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ হবে।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২ জুন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার মোবারক হোসেন তুষারের বাসায় তেলাপোকার কীটনাশক দেন ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেডের কর্মীরা। তারা জানান ৩/৪ ঘণ্টা পর বাসায় প্রবেশ করা যাবে। কীটনাশক দেয়ার ৯ ঘন্টা পর মোবারক তার স্ত্রী শারমিন জাহান ও সন্তানদের নিয়ে বাসায় আসেন। এরপর তারা সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। ঘরে ঢোকার পর ৩ জুন সকাল ৭ টায় শারমিন ও তার দুই সন্তান বমি করেন। তখন আসামি মোসলেহ উদ্দিনকে ফোন করা হলে তিনি জানান, কীটনাশকে এলার্জি ছাড়া অন্য কোন সমস্যা হবে না। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাওয়ালে দুই সন্তান সাময়িক সুস্থবোধ করেন। ওইদিন রাতে তারা সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন ৪ জুন ভোর ৪ টার দিকে ছোট ছেলে শাহির মোবারত জায়ান অসুস্থবোধ করেন। তখন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে বড় ছেলে শায়ান মোবারত জাহিন অসুস্থবোধ করলে তাকেও ওই হাসপাতাল নেওয়া হয়। তখন আইসিইউ নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তারও মৃত্যু হয়। 

এ ঘটনায় ওই বছরের ৫ জুন 'দায়িত্বে অবহেলাজনিত' মৃত্যুর অভিযোগে ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন তুষার বাদি হয়ে রাজধানীর ভাটারা থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সমীর চন্দ্র সূত্রধর চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।