বাসস
  ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৫৭

ডিএসসিসি’র বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অভিযান

ডিএসসিসি’র বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের অভিযান। ছবি: দুদকের ফেসবুক পেইজ

ঢাকা, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে আজ একটি অভিযান শুরু হয়েছে।

দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, অভিযানে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল স্থাপন ও কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষ নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এই কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষ বর্তমানে আনসারদের বেডরুম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যা অনাকাঙ্ক্ষিত বলে জানায় দুদক।

এছাড়াও, ‘সাপ্লাই অব জেনসুলিন অ্যাপ থার্মপ্লাস্টিক পেইন্ট’ প্রকল্প, ‘সাপ্লাই অব পোর্টেবল এয়ার কমপ্রেশার-২ নস’ ও ‘সাপ্লাই অব ব্র্যান্ড নিউ বিটুমিন প্রেসুর ডিস্ট্রিবিউটর’ প্রকল্পের শর্ত পূরণ না করেই বিল উত্তোলন করা হয়েছে বলে অভিযানকালে প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল ও সারুলিয়ার সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প এবং ‘ইমপ্রুভমেন্ট অব ইনার সার্কুলার রিং রোড ফ্রম রায়েরবাজার সুইচ গেট টু লোহার ব্রিজ’- শীর্ষক প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রকল্পসমূহের রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে এনফোর্সমেন্ট টিম।

এদিকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় চর গোপালপুর থেকে ভেন্নাবাড়ি পর্যন্ত মাটির রাস্তা সংস্কার প্রকল্পসহ বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে দেখা যায় যে, প্রকল্পের আওতায় রাস্তা নির্মাণের কথা থাকলেও সেখানে শুধুমাত্র বালু ফেলে রাখা হয়েছে। তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তার কাজ করার সময় অবৈধ ড্রেজার ব্যবহার করে ফসলি জমি কেটে বালু ভরাট করা হয়েছে, যাতে কৃষি জমির ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।

রাস্তার দুই পাশে গাছের খুঁটি ও ব্যারেলের টিন দিয়ে প্যালাসাইডিং করার কথা ছিল। তা করা হয়নি বলে টিম পর্যবেক্ষণ করে।

দুদক টিম আরও জানতে পারে, প্রকল্পের সিডিউলে বর্ণিত রাস্তার উচ্চতা এবং ব্যাসার্ধ পরিবর্তন করে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। এসব অনিয়মের ফলে প্রকল্প কমিটি, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বরাদ্দকৃত ২ কোটি ৪০ লাখ টাকার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।

পরবর্তীতে পাকুড়তিয়া এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কয়েকটি প্রকল্প যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়নি। পাকুড়তিয়া পান্না শেখের বাড়ি থেকে ছোট ডুমুরিয়া দেবেন মণ্ডলের বাড়ি পর্যন্ত এইচবিবি রাস্তায় বরাদ্দ ৪৭ লাখ ২২ হাজার টাকার কাজ সঠিকভাবে হয়নি। উত্তরপাড়া ৭৬ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে বরাদ্দ ৬ লাখ টাকা এবং পারঝনঝনিয়া আইডিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে বরাদ্দ ২ লাখ ২০ হাজার টাকার কাজও যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়নি বলে টিম পর্যবেক্ষণ করে।

এছাড়া ঢাকার ধামরাই উপজেলার কালামপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি, ঘুষ দাবির অভিযোগ এবং দলিল রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-২ থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানের সময় সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বহু দলিল রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে যেগুলোতে খাজনা রশিদের কোনো উল্লেখ ছিল না। আরও দেখা যায়, বিভিন্ন দলিলে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার স্পষ্ট নজির রয়েছে।

অভিযানকালে উল্লিখিত দপ্তর থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংগ্রহ করে দুদক টিম।