বাসস
  ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:৪৭

সংস্কার আর নির্বাচনের মধ্যে কোন সংঘাত নাই : শামসুজ্জামান দুদু

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু আজ গাইবান্ধার শাহ আবদুল হামিদ স্টেডিয়ামের মিলনায়তনে দলীয় সভায় যোগ দেন। ছবি: বাসস

নীলফামারী, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫ (বাসস) : নির্বাচন নিয়ে বিএনপি- জামায়াতের মধ্যে কোন সংঘাত নেই উল্লেখ করে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সবাই নির্বাচন চাচ্ছে ।         
তিনি বলেন, জামায়াতসহ সব দল সংস্কারসহ নির্বাচন চান। বিএনপিও তাই চান। অর্থাৎ সংস্কার আর নির্বাচনের মধ্যে কোন সংঘাত নাই। বিএনপি- জামায়াতের মধ্যেও কোন সংঘাত নাই। একটি ভালো নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সময় গ্রহন করা যেতে পারে। সরকারও তাই করছে বলে আমাদের বিশ্বাস। তবে অতিরিক্ত সময় যাতে ব্যয় না হয়।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নীলফামারীতে একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। জেলা বিএনপি’র সভাপতি আ.খ.ম আলমগীর সরকারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, মিজানুর রহমান চৌধুরী শামীম এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম ।

দুদু বলেন, আমরা মনে করি গণতন্ত্রের প্রত্যাশা যদি পূরণ না হয়, তাহলে সংকট আরো বাড়বে। এই সংকটকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি নির্বাচিত সরকার দরকার। সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, যে ভোটাধিকার মানুষের ছিল না, সেই অধিকার যত দ্রুত সম্ভব  ফেরত দিয়ে এদেশে একটি অবাধ, সূষ্টু নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। আমাদের নেতাও (তারেক রহমান) বার বার বলেছেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে বিতাড়িত করেই দেশে জনগনের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। দেশের জনগন ও ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়েই রাজপথেই এর ফয়সালা হয়েছে।

তিনি বলেন,অর্ন্তবর্তী সরকারের কাছে আমাদের চাওয়া, দ্রুত দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা। যেন মানুষ স্বাভাবিকভাবে জীবন ধারণ করতে পারে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। এ বিষয়গুলো আমরা আগেও বলেছি, এখনও বলছি। বিএনপি জনগনের প্রতিনিধি হিসেবে সে দায়িত্ব গ্রহণ করতে চায়।  

দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের পিপাসায় আমরা ১৬-১৭ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। স্বৈরাচারকে হটিয়েছি। ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়ে বাংলাদেশ এখন জঞ্জাল মুক্ত হওয়ার পথে আছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা চাইছি যাতে বাংলাদেশে সঠিক, স্বাভাবিক, গ্রহণযোগ্য ও অংশীদারিত্বমূলক একটি নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ তার পছন্দের দল এবং প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার তৈরি হবে যারা দেশ পরিচালনা করবে।

বিগত সরকারের সময়ে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাজার হাজার মানুষ গুম খুন নিখোঁজ হয়েছে। ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, নব্বইয়ের গণ অভ্যুত্থান হয়েছে। সর্বশেষ ২৪শের গণঅভ্যুত্থান। ছাত্র জনতা রক্ত দিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে। এখন বাংলাদেশের প্রত্যাশা মানুষের সুখ স্বাচ্ছন্দের। কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষ একটু স্বস্তির সঙ্গে বসবাস করতে চান।  শ্রমিক তার অধিকার চায়, সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে জীবন যাপন করতে চায়। সেই জায়গায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও আমাদের নেতা তারেক রহমান সংগঠনকে মানুষের প্রত্যাশা পূরণের জন্য পূর্বের মতোই মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান। সেই লক্ষ নিয়েই আমরা আগামী দিনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছি।

বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহনের প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে দুদু বলেন,‘১৬ বছর ধরে বিএনপি মুখিয়ে আছে একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচনে অংশগ্রহনের জন্য। এখন নতুন করে প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। বিএনপি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। শুধু সরকারের কাছে প্রত্যাশা মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে।