বাসস
  ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:১১

দিন দিন শঙ্কা বাড়ছে: রিজভী

রুহল কবির রিজভী শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ ভাসানী হলে ‘ঠিকানা বাংলাদেশ’র কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন। ছবি: বাসস

ঢাকা, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী কুমিল্লায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, দেশে শঙ্কা দিন দিন বাড়ছে।

তিনি প্রশ্নের ছলে বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার টানা দেড় দশকের শাসনামলে সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি এখন কেন ঘটছে! কেউ অন্যায় করলে অবশ্যই আইনানুগভাবে তাকে গ্রেফতার করা হবে-এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিনা কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলবে, তা কখনোই কাম্য নয়।’

রুহল কবির রিজভী শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ ভাসানী হলে ‘ঠিকানা বাংলাদেশ’র কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিন বক্তৃতা করেন।

কুমিল্লায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘সত্যিই যদি সে অপরাধী হয়, তাহলে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নেয়া যেত। কিন্ত তাকে গ্রেফতারের পর ভয়াবহ টর্চার করে মেরে ফেলে বাবা মার কাছে তার লাশ পাঠিয়ে দেওয়া-এইটা এ আমলে হবে কেন ?’

এ সময় রিজভী জানান, ড. ইউনূস নির্বাচিত সরকার না হলেও এ দেশের মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনা করছে। তাঁকে পৃথিবীর বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলো অত্যন্ত পছন্দ করে। তাঁর আমলে শেখ হাসিনার শাসনামলের মতো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়।

এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে আরো বিচক্ষণতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে, তাই যারা ছাত্র-ছাত্রী, তাদের জায়গা হচ্ছে ক্যাম্পাস। ছাত্ররা যদি মন্ত্রণালয় প্রতি একটি করে কমিটি করে, তাহলে একটি রাষ্ট্রের ফাংশনাল যে সিস্টেম, তা বাধাগ্রস্ত হবে এবং এটি যে একটি আর্টিকুলেটেড রাষ্ট্র - সেটি তো হবে না বরং বিপন্ন অবস্থা হবে।’

ছাত্ররা যদি প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে কমিটি গঠন করে, তাহলে তো ব্যবসায়ীরা ওই কমিটির সদস্যদের পিছে ছুটবে-একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা তখন এসব কমিটির সদস্যদের বালিশের নিচে টাকা দিয়ে আসবে। তাদেরকে দুর্নীতির পথে নিয়ে যেতে প্রভাবিত করবে।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের সেনাবাহিনী বিশ্বব্যাপি গর্বিত একটি বাহিনী। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে তাদের সুনাম যেমন অনন্য, তেমনি আমরা দেখেছি যখনই যাই হোক কিন্তু চূড়ান্তভাবে জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ বাহিনী সম্পর্কে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বহুল প্রচারিত একটি পত্রিকা নানা ধরনের অপমানজনক মন্তব্য করে প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।’

এর নেপথ্যের কাহিনী তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘ওদের পছন্দের সরকার এখন আর বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় নেই। এজন্যই পাশ্ববর্তী দেশটি এক ধরনের অনুশোচনায় ভুগছে। ফলে তারা ক্রমাগতভাবে মিথ্যা বয়ান তৈরি করে বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক পরিসরে অপপ্রচার করে বাংলাদেশকে হেয় প্রতিপন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে।’