বাসস
  ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:২৮

ছাত্রসমাজ ও গণমানুষের ঐক্য বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে : শিল্প উপদেষ্টা 

চট্টগ্রাম, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান বলেছেন, আমরা একটা কথা বলি, একুশ মানে মাতা নত না করা, আজকে তো ১ ফেব্রুয়ারি, আমাদের এবারের একুশে ফেব্রুয়ারি যেন সেটা মনে রেখেই উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশ যেটা আশা করে সেটা হচ্ছে, মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো। ছাত্র সমাজ ও গণমানুষের ঐক্য বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। 

আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম চত্বরে ২৬ দিনব্যাপী অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আদিলুর এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট যেই ঐক্য রচিত হয়েছে সেটা যেন আমাদের প্রতিনিয়ত মনে থাকে, সেই ঐক্য যেন কোনো অবস্থাতেই কোনো শক্তি ভেঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা না করতে পারে। আমাদের যেকোনো দুর্বলতার সুযোগে ফ্যাসিবাদ যেন ফিরে আসার চেষ্টা করতে না পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে আগ্রাসন এবং বিভিন্ন ধরনের আক্রমণ থেকে কিন্তু আমরা মুক্ত নই। 

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে ও চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের বাস্তবায়নে এবারে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এর আগে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বইমেলার উদ্বোধন করেন আদিলুর রহমানসহ অতিথিরা। 

শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান বলেন, এবারের বইমেলার অবয়বটা আলাদা। দীর্ঘ সাড়ে ১৫বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন ঘটিয়ে জুলাইয়ের ৩৬দিনে যেই ছাত্র জনতা, রক্ত দিয়ে বাংলাদেশ বদলে দিয়েছে। সেই বদলে দেয়া অবয়বের উপর দাঁড়িয়ে আজকের এই বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাংলাদেশে বইমেলা ৫২সাল থেকেই হচ্ছে। 

তখন থেকেই ২১ উদযাপন এর পাশাপাশি খুবই ছোট আঙ্গিকে প্রচারণার জন্য স্মরণিকা বের করে নিজেদের পাড়ায় পাড়ায় কিন্তু অনুষ্ঠান ছিল। ব্যাপকভাবে হয়তো বাংলা একাডেমি অনেক পরে শুরু করেছে। সেই সময়ে চট্টগ্রামেও ছোট ছোট অঙ্গনে সেই কাজগুলো হতো। 

তিনি বলেন, আজকের বাস্তবতা হচ্ছে, সমস্ত উদ্যোগকে চাপিয়ে বাংলাদেশকে বদলে দেয়ার উপর দাঁড়িয়ে মানুষের অধিকার আদায়ের এবং অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে যেই সংগ্রাম, একটা ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যে সফল সংগ্রাম, সেটার উপর দাঁড়িয়ে আজকের বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করি এই সংগ্রামে অংশ নেয়া সমস্ত ছাত্রছাত্রী তাদের কথাগুলো লিখবে। তারা শহিদদের কথাগুলো লিখবে। আমাদের প্রতিনিয়ত যেন এই কথা মনে থাকে, রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আমরা আজকের বাংলাদেশে আছি। 

সভাপতির বক্তব্যে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয়নি, বই কিনলে জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ হয়। আমি মনে করি পড়ার কোন বিকল্প নেই। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন কিংবা ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান সবগুলো মেধার ভিত্তিতে হয়েছে। মানুষের মৌলিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার যে সংগ্রাম, সবকিছুই আমাদের যে জ্ঞান ভান্ডার সেটা সমৃদ্ধ থাকার কারণেই সম্ভব হয়েছে। ৫২ থেকে ২৪ পর্যন্ত ছাত্ররাই কিন্তু আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে। এর সাথে শ্রমিক-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। 

বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ আহসান হাবিব পলাশ, সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি শাহাব।

স্বাগত বক্তব্য দেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বইমেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম। এ সময় অতিথিদের হাতে বই উপহার তুলে দেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। পরে উপদেষ্টাসহ অতিথিরা বইমেলার স্টলগুলো পরিদর্শন করেন।