বাসস
  ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০:৫৩

ইরানের ইসলামি বিপ্লব বিশ্বের সকল স্বাধীনতাকামী জাতির জন্য রোল মডেল

শনিবার রাজধানীতে ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ৪৬তম বিজয়বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় অতিথিরা। ছবি : বাসস

ঢাকা, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : ইরানের ইসলামি বিপ্লবের বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকায় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, ১৯৭৯ সালে ইমাম খোমেইনী (র.) এর নেতৃত্বে সংঘঠিত ইরানের ইসলামি বিপ্লব দুনিয়ার মুসলমানের কাছে এমন কি মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সমগ্র মানবতার কাছে এক নুতন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। 

তারা বলেন, ঐতিহাসিক এই বিপ্লবের সাড়ে ৪ দশকের সাফল্য আজ বিশ্বের সকল মুসলিম ও স্বাধীনতাকামী জাতির জন্য একটি রোল মডেল।

আজ শনিবার ইরানের ইসলামি বিপ্লবের ৪৬তম বিজয়বার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকায় ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে ‘ইরানের ইসলামি বিপ্লব: বিশ্বের জাতিগুলোর জন্য অনুপ্রেরণা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসূফ মাহবুবুল ইসলাম।  

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশী ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আইয়ুব ভূইয়া। 

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ ইস্টার্ন প্লাস জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ রুহুল আমীন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ রেজা মীরমোহাম্মদী।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ইরানের ইসলামী বিপ্লব সাধারণ কোন বিপ্লব নয়। এ বিপ্লব বিগত এক হাজার বছরের সেরা আদর্শিক বিপ্লব, যা ইরানি জাতির জন্য ফিরিয়ে আনে প্রকৃত স্বাধীনতা, সম্মান ও উন্নয়নের বিরতিহীন অগ্রযাত্রার সেই গৌরবের ধারা। দশকের পর দশক ধরে চলমান নানা ষড়যন্ত্র ও কঠিন অবরোধের মধ্যেও বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে দ্রুত গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে দেশটি।

তারা বলেন, আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইরান বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে শক্তিশালী অবস্থান বলে দিচ্ছে দেশটি কতটা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। শিক্ষা, বিজ্ঞান, উদ্ভাবন, প্রযুক্তিগত উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখন নেতৃস্থানীয় দেশের তালিকায় রয়েছে ইরান। বিশেষ করে আবিষ্কার ও উদ্ভাবন, ন্যানো প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, সাবমেরিন বা ডুবো জাহাজ শিল্প, অ্যারোস্পেস, সামরিক ও বেসামরিক বিমান শিল্প, কৃত্রিম উপগ্রহ ও মহাকাশ সংক্রান্ত প্রযুক্তি, চিকিৎসা এবং কৃষিতে বিশ্বসেরা ১০টি দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে আজকের ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান, বক্তারা বলেন।

বক্তারা বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে ইরানের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে দেশটির অগ্রগতি আজ চোখে পড়ার মতো।টাইমস হায়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‌্যাংকিং ২০২৫-এ বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে স্থান পেয়েছে ইরানের ৮১টি বিশ্ববিদ্যালয়।

তারা বলেন, ইসলামী বিপ্লবের পর ইরানের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, কঠিন অবরোধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু এসব কিছুই ইসলামি ইরানের দুর্বার অগ্রযাত্রাকে থামাতে পারেনি। ইরান তার শক্তি ও সামর্থের কারণেই বিশ্বে আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। যে দেশটি কোন অপশক্তির কাছে মাথানত করে না। তবে বিশ্বের মজলুম মানুষের পক্ষে দেশটির সহযোগিতার হাত সব সময় প্রসারিত। বিশেষ করে ফিলিস্তিনের মজলুম মানুষের পক্ষে ইরান যেভাবে সর্বশক্তি দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছে এমন নজির বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই।

বক্তারা বলেন, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান সব সময় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখায় বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো ইরানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়ে রেখেছে। কিন্তু ইসলামের শত্রুদের সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে দেশটি যেভাবে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিকে এগিয়ে চলেছে তা বিশ্বের জাতিগুলোর জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।