শিরোনাম
ঢাকা, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়ে হাত হারানো শিশু নাঈম হাসান নাহিদের নামে ৩০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দেওয়ার রায় প্রতিপালন না করায় ওয়ার্কশপ মালিককে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগামী ২১ এপ্রিল তাকে হাজির করতে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারের (এসপি) প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিশুটিকে ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে রায় প্রতিপালন না করায় আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।
আদালতে শিশুটির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ওমর ফারুক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
নাঈমের হাত হারানোর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বও মাসে তার বাবা মো. নিয়ামুল হোসেন আনোয়ার হাইকোর্টে রিট করেন। সেই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। একপর্যায়ে রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে হাইকোর্ট শিশু নাঈমের নামে ১৫ লাখ টাকা করে ১০ বছর মেয়াদে দুটি ফিক্সড ডিপোজিট করে দিতে ওয়ার্কশপের মালিককে নির্দেশ দেন। রায়ে প্রথমটি ঐ বছরের এপ্রিলে ও দ্বিতীয়টি ডিসেম্বরের মধ্যে করতে বলা হয়। একই সঙ্গে নাঈমের পড়ালেখার খরচ হিসেবে প্রতি মাসে সাত হাজার টাকা করে তার ব্যাংক হিসাবে জমা দিতে মালিকপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ওয়ার্কশপ মালিক ইয়াকুব হোসেন 'লিভ টু আপিল' (আপিল দায়েরের অনুমতির আবেদন) করেন। তবে এই লিভ টু আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে।
‘ভৈরবে শিশুশ্রমের করুণ পরিণতি’ শিরোনামে প্রকাশিত যে প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করা হয় সেখানে উল্লেখ করা হয় যে, নাঈমের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা গ্রামে। তার বাবা নিয়ামুল হোসেন আনোয়ার পেশায় জুতা ব্যবসায়ী। কর্মসূত্রে পরিবার নিয়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাস করছিলেন তিনি। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে আনোয়ার কর্মহীন হয়ে পড়েন। সংসারের চাপ সামলাতে নাঈমকে তার মা- বাবা ভৈরবের একটি ওয়ার্কশপে কাজে দেন। ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়ে নাঈমের ডান হাত ড্রিল মেশিনে ঢুকে যায়। পরে শিশুটিকে বাঁচাতে চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কনুই থেকে তার ডান হাত বিচ্ছিন্ন করেন। সে সময় নাঈমের পরিবার ভৈরবের কমলপুর এলাকার নূর বিল্ডিং নামের একটি ভবনে ভাড়া থাকত। ভবনটির মালিক এলাকার ইকবাল হোসেন ইয়াকুব।