শিরোনাম
ঢাকা, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : পুলিশ সংস্কার কমিশন (পিআরসি) দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্র ও অন্যান্যদের হত্যা ও আহত করার অভিযোগে অভিযুক্ত পুলিশ ও কর্মকর্তাদের সুষ্ঠু বিচারের পরামর্শ দিয়েছে।
পিআরসি’র চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্যই নয়, অধিকন্তু পুলিশের প্রতি ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি করতে ও বাহিনীর প্রতি জনসাধারণের আস্থা পুনরুজ্জীবিত করার জন্যও দায়ী পুলিশ কর্মকর্তা ও তাদের প্রশিক্ষকদের বিচারের সম্মুখীন করা প্রয়োজন।
এতে বলা হয়েছে, যদি নৃশংসতার জন্য দায়ী পুলিশ কর্মীদের বিচারের মুখোমুখি না করা হয়, তাহলে ক্ষমতার অপব্যবহারকে বৈধতা দেওয়া হবে- যা আরো দমনমূলক ব্যবস্থার পথ প্রশস্ত করবে। কিন্তু কমিশন বিক্ষোভের সময় তাদের ভূমিকার জন্য শাস্তি দেওয়ার আগে তাদের একটি ‘সুষ্ঠু বিচার’ আশা করে। বিক্ষোভকালে পুলিশ বাহিনীর এই ভূমিকার জন্য তাদের বিরুদ্ধে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এটি (সুষ্ঠু বিচার) পুলিশ সদস্যদের মধ্যে দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতার সংস্কৃতি তৈরি করবে এবং একই সাথে জনগণকে এই বার্তা দেবে যে, রাষ্ট্র তার নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ও অন্যায় প্রতিরোধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
পিআরসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু বিচার পুলিশকে প্রকৃত অর্থে জনবান্ধব বাহিনীতে পরিণত করতে সাহায্য করবে।
কিন্তু কমিশন এও বলেছে, গণঅভ্যুত্থানের সময় পুলিশের নৃশংস কর্মকাণ্ড ‘পুলিশ-জনগণের সম্পর্কের ওপর দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব ফেলবে’ এই ধারণাটিকে তারা অস্বীকার করতে পারে না।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ ৫০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য এখন বিক্ষোভের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে বিচারের সম্মুখীন হয়েছেন।
অন্যদের মধ্যে একই অভিযোগের সম্মুখীন হচ্ছেন- ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ও বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম ও সাবেক গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন-উর-রশিদ।
তাদের মধ্যে কেবল চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন গত সপ্তাহ পর্যন্ত ব্যক্তিগতভাবে বিচারের জন্য কারাগারে ছিলেন।
এই সপ্তাহের শুরুতে পুলিশের অভিযানে পাঁচজন পলাতক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তারা হলেন, জুলাই-আগস্ট বিদ্রোহের সাথে সম্পর্কিত একাধিক মামলায় ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) মোল্লা নজরুল ইসলাম ও সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) আসাদুজ্জামান, আব্দুল মান্নান, আবুল হাসনাত ও শাহাদাত। অন্যরা পলাতক রয়েছেন।