বাসস
  ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:০০

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বিভিন্ন স্থানে দুদকের অভিযান

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বিভিন্ন স্থানে দুদকের অভিযান। ছবি: দুদক

ঢাকা, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): সরকারি কাজে অনিয়ম, দুর্নীতি, সেবা প্রদানে হয়রানি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

আজ দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম জানান, বাগেরহাট এলজিইডি কর্তৃক ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ‘বাগেরহাট জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাগেরহাট সদর উপজেলাধীন বেমরতা ইউনিয়নে বেমরতা টু কলাবাড়িয়া আদর্শগ্রাম সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের বাগেরহাট জেলা কার্যালয় থেকে আজ একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

অভিযান পরিচালনাকালে টিম কর্তৃক বাগেরহাটের এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে উক্ত সড়ক নির্মাণকাজের রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয় এবং সড়ক বিভাগ, বাগেরহাটের নিরপেক্ষ প্রকৌশলীসহ সড়ক পরিদর্শনপূর্বক সড়কের বিভিন্ন অংশে ব্যবহৃত সামগ্রীর নমুনা গ্রহণ করা হয়। 

অভিযানকালে দেখা যায়, অভিযোগে বর্ণিত আলোচ্য রাস্তা নির্মাণে বেশ কিছু নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া বালি-ইট-খোয়ার মিশ্রণে খোয়া অনুপাতে কম ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া প্যালাসাইডিং এর পাইল ও প্লেট সড়কের পাশে উপড়ে গিয়েছে বলে দুদক টিম প্রত্যক্ষ করে। প্যালাসাইডিং সঠিকভাবে না করা এবং ডব্লিউবিএম লেয়ারের উপরে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে এলজিইডি থেকে পত্র দেয়া হয়েছে বলে টিম জানতে পারে। 

সার্বিক বিবেচনায় ওই রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে বলে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। রাস্তা তৈরিতে ব্যবহৃত মালামালের গুণগত মান পরীক্ষার জন্য কিছু নমুনা সওজ ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে। ল্যাব টেস্টের রিপোর্ট প্রাপ্তি এবং সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশনের কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লি. কর্তৃক ভ্যাটের চালান জালিয়াতি করে রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে আকতারুল ইসলাম জানান। 

অভিযান পরিচালনাকালে এনফোর্সমেন্ট টিম বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন পরিদর্শন করে অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে নথিপত্র সংগ্রহ করে। নথিপত্র যাচাই ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য গ্রহণপূর্বক অভিযোগের সত্যতা রয়েছে বলে টিমের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। অভিযোগের বিষয়সমূহ বিশদভাবে যাচাইয়ের লক্ষ্যে টিম কর্তৃক প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনাপূর্বক কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

এদিকে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের বহির্বিভাগে টিকিট বিক্রয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও সেবা প্রদানে হয়রানির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে এনফোর্সমেন্ট টিম ছদ্মবেশে টিকিট বিক্রয় এবং ওষুধ বিতরণ সংক্রান্ত কার্যক্রমসহ অন্যান্য কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে। সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে টিকিট বিক্রয় সংক্রান্ত অনিয়ম দেখা যায়, বিক্রিত টিকিটের মধ্যে অনেক টিকিট বিক্রয় রেজিস্টারে এন্ট্রি করা হচ্ছে না। 

অভিযানকালে রোগীদের ওষুধ বিতরণের রেজিস্টার, স্টক রেজিস্টারসহ অন্যান্য রেজিস্টার চেক করা হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে ওষুধ বিতরণে নানা অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়। অভিযানকালে প্রাপ্ত অসংগতিসমূহের বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত টিম কর্তৃক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।